RD | ১৯ মে ২০২৫ ০৭ : ৪০Rajit Das

আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানকে সহায়তা করায় ভারত-তুরস্ক সম্পর্কের অবনতির ঘটেছে। তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আগেও যে খুব মধুর ছিল এমনটা নয়। ভারতের দীর্ঘ ইতিহাসে, বিশেষ করে অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনকালে সংঘাত এবং সংঘর্ষ বর্তমানে চর্চয় উঠে এসেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, মুঘল সম্রাট বাবরের কন্যা এবং সম্রাট আকবরের পিসি মুঘল রাজকন্যা গুলবদন বেগমের গল্প।

গুলবদন বেগম কে ছিলেন?

গুলবদন বেগম তাঁর সৎ ভাই সম্রাট হুমায়ুনের জীবন ও সময়কালের একটি বিবরণ নিয়ে 'হুমায়ুন-নামা' লিখেছিলেন। যা তিনি হুমায়ুনের পুত্র এবং উত্তরসূরী সম্রাট আকবরের অনুরোধে লিখেছিলেন।

'হুমায়ুন নামা' তাঁর অনবদ্য লেখালেখির এক উজ্জ্বল প্রদর্শন হলেও, ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯২৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কের বিশাল ভূখণ্ডে মিশর, গ্রীস, তুরস্ক, রোমানিয়া, ইজরায়েল, লেবানন, সিরিয়া এবং আরব উপদ্বীপের একটি বিশাল অংশ শাসনকারী শক্তিশালী খিলাফতের বিরুদ্ধে এককভাবে লড়েছিলেন  গুলবদন।

প্ররাক্রমী অটোমান সাম্রাজ্যকে অমান্যকারী মুঘল রাজকুমারী-

গল্প অনুসারে, হুমায়ুনের বোন এবং সম্রাট আকবরের পিসি গুলবদন বেগম বেড়ানো খুব পছন্দ করতেন। প্রায়শই মুঘল সাম্রাজ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে ঘুরতেন তিনি।

ঐতিহাসিক বিবরণ অনুসারে, গুলবদন বেগম মক্কায় হজ পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং ইসলামের পবিত্রতম নগরীতে পৌঁছানোর পর, মুঘল রাজকুমারী অভাবী এবং নিপীড়িতদের মধ্যে সম্পদ বিতরণ শুরু করেন।

সেই সময়, সম্রাট আকবরের অধীনে মুঘল সাম্রাজ্য সমৃদ্ধ হচ্ছিল এবং একটি শক্তিশালী সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল, যা মধ্যযুগীয় অন্যান্য শক্তিশালী সাম্রাজ্যের শক্তিকে দুর্বল করে তুলেছিল।

গুলবদনের দানধ্যান অটোমান সাম্রাজ্যের রাজাদের আতঙ্কিত করে তুলেছিল। ফলে গুলবদন বেগমের বিরুদ্ধে অটোমান রাজারা ফরমান জারি করেছিলেন।

যাইহোক, গুলবদন বেগমের নিঃস্বার্থ দানের কাজ সেই সময়ে আরব উপদ্বীপ শাসনকারী শক্তিশালী অটোমান সাম্রাজ্যের ক্রোধের কারণ হয়েছিল। কারণ অটোমান খলিফা একজন বিদেশি রাজকন্যার খিলাফতের প্রজাদের মধ্যে সম্পদ বিতরণ করাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেননি।

শীঘ্রই, অটোমান সাম্রাজ্য একের পর এক চারটি ফরমান জারি করে, গুলবদন বেগমকে আরব ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবি করে। কিন্তু সাহসী রাজকন্যা প্রতিটি ফরমান লঙ্ঘন করেন। তিনি মক্কা এবং আরবের কিছু অংশে অবাধে ঘোরাফেরা করতে থাকেন।

অবশেষে, অটোমানরা অশ্লীল ভাষায় ভরা পঞ্চম ফরমান জারি করলে মুঘল সম্রাট আকবর ক্ষুব্ধ হন। তিনি তখন তাঁর পিসি গুলবদন বেগমকে ভারতে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। কারণ তিনি মুঘল রাজকন্যার বিরুদ্ধে অটোমানদের এমন নোংরা ভাষা ব্যবহার সহ্য করতে পারেননি।