আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভালোবাসার ক্ষেত্রে, মানুষ প্রায়ই বয়সকে উপেক্ষা করে, কারণ প্রায়শই বলা হয় যে ভালোবাসার কোনও সীমানা নেই। যদিও ভালোবাসার ক্ষেত্রে বয়স কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, তবুও বিয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আলোচনার একটি সাধারণ বিষয় হল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের পার্থক্য। অনেক সমাজে ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয় যে স্বামীর বয়স স্ত্রীর চেয়ে বেশি হওয়া উচিত। কিন্তু এটি কি সত্যিই প্রয়োজনীয়, না কি কেবল একটি পুরনো মানসিকতা? আসুন জেনে নেওয়া যাক বিজ্ঞান এবং সমাজ এই বিষয়ে কী বলে।

ভারতীয় সমাজে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তিন থেকে পাঁচ বছরের বয়সের ব্যবধান সাধারণত বিয়ের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। যেখানে স্বামীই বয়স্ক সঙ্গী হন। এই বিশ্বাস গভীরভাবে প্রোথিত বিশেষ করে দেখাশোনা করে বিবাহের প্রেক্ষাপটে। যেখানে বয়সের বিষয়টি প্রায়শই যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে, অনেক সফল বিবাহ রয়েছে যেখানে স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বয়সে বড়। যেমন, বলিউড অভিনেতা শাহিদ কাপুর এবং মডেল মীরা রাজপুত (১৫ বছরের বয়সের পার্থক্য) অথবা অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং আমেরিকান গায়ক-গীতিকার নিক জোনাস (যেখানে প্রিয়াঙ্কা ১০ বছরের বড়)। এই দম্পতিরা ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছেন। তবুও তাঁদের সম্পর্ক বজায় রয়েছে এখনও। আজকের দিনে প্রেমের বিবাহের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরাঞ্চলে বয়সের পার্থক্য কম উদ্বেগের বিষয়। তবে, সমাজের একটি অংশ এখনও এই আদিম দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে এখনও।

বিজ্ঞানের মতে, বিবাহের কথা বিবেচনা করার সময় শারীরিক এবং মানসিক পরিপক্কতা অপরিহার্য। মেয়েরা সাধারণত ছেলেদের তুলনায় পরিণত হয় দ্রুত। মেয়েদের হরমোনের পরিবর্তন ৭ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। ফলস্বরূপ, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মানসিক স্থিতিশীলতা এবং মানসিক বোধগম্যতা আগে থেকেই গড়ে ওঠে।

ভারতে মেয়েদের জন্য বিয়ের আইনি বয়স ১৮ এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছর। এর ফলে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ৩ বছরের বয়সের পার্থক্য সাধারণত উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। এই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণটি মূলত শারীরিক ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার দিকেই জোর দেয়। তবে এটি মনে রাখা জরুরি, বিবাহ কেবল শারীরিক বিকাশের উপর নির্ভর করে না। বিবাহের ন্যূনতম বয়স দেশভেদে পরিবর্তিত হয়। বিবাহের সাথে মানসিক এবং বুদ্ধির পরিপক্কতাও জরুরী।

একটি বৈবাহিক সম্পর্কের সাফল্য বয়সের ব্যবধান দ্বারা নির্ধারিত হয় না। বরং সঙ্গীদের মধ্যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়া দ্বারা নির্ধারিত হয়। বয়সের পার্থক্য তিন হোক বা ১৫, সত্যিকারের সফল সম্পর্কগুলি পারস্পরিক বোঝাপড়া, মানসিক সমর্থন এবং মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করেই টিকে থাকে।