শনিবার ০৩ মে ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

রাজ্য | কর্তব্যে অবিচল থেকে সমাজকে শিক্ষিত করায় মগ্ন সিভিক হীরালাল

Sumit | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭ : ৫৮Sumit Chakraborty


মিল্টন সেন,হুগলি  : কাজে কখনও ফাঁকি নেই। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলাচ্ছেন। আবার সময় মতো থানার কাজ করছেন। কাজের অবসরে চালাচ্ছেন পাঠশালা। যদিও পাকাপোক্ত নয়, তাঁর পাঠশালা তৈরি পাটকাঠি দিয়ে। তবু সেই পাঠশালায় পড়ুয়ার সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এভাবেই সারাদিন কাজ কর্ম আর অবসর সময়ে শিক্ষিত সমাজ গড়ার করে লড়াইয়ে মগ্ন পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরালাল সরকার।

 

ধীরে ধীরে ছোটদের এই পাঠশালা সমগ্র বলাগড়ে হীরার পাঠশালা নামে খ্যাতি অর্জন করেছে। আর হীরার সেই পাঠশালায় স্বচ্ছন্দে শিখছে পড়ছে ছোটোরা। আর বলাগড়ের এই সিভিক ভলেন্টিয়ারের উদ্যোগে যথার্থই খুশি হুগলি গ্রামীণ পুলিশ। এদিকে শিক্ষক হীরালালের হাত ধরে ভালো করে শেখার সুযোগ পেয়ে খুশি কচিকাঁচারা।

 

সকাল থেকে হীরালালকে দেখা যায় হুগলির বলাগড় ব্লকের নাটাগরে এস টি কে কে রোডের উপর। প্রতিদিন নিয়ম করে তাঁকে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ত্ব, অর্থাৎ ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলাতে হয়। রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা তাঁকে দেখা যায় রাস্তার যান নিয়ন্ত্রণ করতে। দায়িত্ত্ব নিয়ে মানুষকে রাস্তা পারাপার করতে সাহায্য করেন হীরালাল। 

 

বলাগড় ব্লকের নাটাগড় মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত একটি গরীব গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। সেখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই ক্ষেতমজুর বা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। তাই স্বল্প রোজগারে গ্রামবাসীদের অধিকাংশেরই গৃহশিক্ষক রাখার সমর্থ্য নেই। নিষ্ঠার সঙ্গে সেই গৃহশিক্ষকের অভাব পূরণ করেন হীরালাল। দীর্ঘ দিন ধরে বিনামূল্যে পড়ুয়াদের পাঠদান করেন সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরা। আর সেই শিক্ষা দানের জন্য রাস্তার পাশে পাটকাঠির বেড়া দিয়ে তৈরি করেছেন একটি চালা ঘর। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে প্রায় ২০ জন পড়ুয়া আসে ওই পাঠশালায়। তার কাছে তালিম নিয়ে তার পর যায় স্কুলে।

 

ঘণ্টা দেড়েক খুদে পড়ুয়াদের লেখাপড়া শেখানোর পর তাদের হাত ধরে রাস্তা পার করে স্কুলেও পৌঁছে দেন। এটা তার নিত্য দিনের কাজ। বর্তমানে নাটাগড়ে পাটকাঠির ওই চালা ঘর, হীরার পাঠশালা নামে পরিচিতি লাভ করেছে। হীরার পাঠশালায় মিড-ডে মিল না থাকলেও, পড়া শেষে পড়ুয়াদের জন্য থাকে বিস্কুট আর লজেন্স। আর তাতেই খুশি পড়ুয়ারা। বিস্কুট লজেন্স পেয়ে আনন্দে আত্নহারা খুদেরা হীরার হাত ধরে পৌঁছে যায় স্কুলে। সেখানে দুপুরে মিড-ডে মিল। এভাবেই চলে পড়াশোনা।

 

২০১০ সালে বলাগড় কলেজ থেকে বিএ পাস করেন হীরালাল সরকার। এরপর হুগলি গ্রামীণ পুলিশের বলাগড় থানার সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজে যোগ দেন। সকালে ট্রফিকের দায়িত্ব সামলাতে হয়। থানাতেও কাজ থাকে। সব মিটিয়ে বিকেলে বাবার সবজির দোকানে কাজ করতে হয়। তার মাঝেই পাঠশালা। তবে বরাবরই নিজের দায়িত্ব কর্তব্যে অবিচল হীরা এক সময় ভালো ক্রিকেট খেলত। 

 

হীরার পাঠশালার প্রশংসায় মুখর স্থানীয় পাপিয়া সরেন, প্রিয়াঙ্কা মান্ডিরা। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকদিন সকাল হলেই তাঁরা তাঁদের ছেলে মেয়েকে পাঠাশালায় পৌঁছে দিয়ে আসেন। হীরালাল হাজার কাজের মাঝেও ঠিক সময়মতো সেখানে হাজির থাকেন। তাঁদের সন্তানদের পড়িয়ে আবার স্কুলে পৌঁছে দেন। সর্বদা সকলের সঙ্গে হাসিমুখে সম্মান দিয়ে কথা বলে হীরা। বাচ্চাদের স্নেহ করেন ,যত্ন করে পড়াশোনা শেখান। তাঁদের ছেলে মেয়েরা বিনে পয়সায় পড়াশোনা শেখার সুযোগ পায়।

 

এই প্রসঙ্গে হীরালাল বলেছেন, সম্পূর্ণ ওই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। অনেকেই মনে করেন এরা পিছিয়ে পড়া মানুষ। তিনি যেহেতু ওখানে ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাই তিনি তার কাজের ফাঁকেই কচিকাঁচাদের পড়াশোনাটা একটু দেখিয়ে দেন। তাতে তারা কিছুটা হলেও শিখতে পারে। যে সমস্ত পরিবারের প্রাইভেট পড়ানোর সাধ্য নেই, সেই পড়ুয়াদের যত্ন করে তিনি পড়াশোনা শিখিয়ে থাকেন। মূলত খুদে পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতেই তার এই উদ্যোগ। সমাজের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে তার বেশ ভালোই লাগে।

 

এই প্রসঙ্গে হুগলি গ্রামীন পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র বলেছেন, সবাই খারাপ হয় না। হীরালকে দেখলে সেটা বোঝা যায়। ও ক্রমাগত ছোটোদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু হতদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর মহৎ চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ছয় মাস ধরে নিজের চেষ্টায় ধীরে ধীরে পাঠশালা গড়ে তুলেছে। তার ওই উদ্দেশ্যই হলো ছোটোদের শিক্ষিত করা। পুলিশের তরফে ওর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিজিৎ বাবু। হুগলি গ্রামীন পুলিশের সুপার কামনাশিস সেন নিজেও এই ধরনের কাজ পছন্দ করেন। তাই গ্রামীণ পুলিশের তরফে হীরাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিন বলাগড় থানার ওসি রাজকিরণ মুখার্জি এবং ডিএসপি ক্রাইম হীরালালকে তার মহৎ কাজের জন্য তাকে থানায় ডেকে সম্বর্ধনা দিয়েছেন।


Hoogly policeCivic police

নানান খবর

নানান খবর

ধেয়ে আসছে কালবৈশাখী!‌ কোন কোন জেলায় শনিবার ভারী দুর্যোগ জানুন 

বিদ্যালয়ে প্রথম, জেলায় ছাত্রীদের মধ্যে সেরা, তবু মেধাবী থৈবির জন্য কাঁদছে স্কুল ও পরিবার

 সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের জের, শহর কলকাতার এই রেস্তোরাঁগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দিল পুরসভা

গঙ্গার ইলিশের সঙ্গে এবার বাঙালির পাতে পড়তে চলেছে গঙ্গার গলদা চিংড়ি

ভাল রেজাল্ট হবে তো? ফল প্রকাশের কিছুক্ষণ আগেই চরম সিদ্ধান্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর

স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পালন চন্দননগরে, শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার উঠল দাবি

মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরে বড়সড় বদল, নতুন সফরসূচি জানিয়ে দিল প্রশাসন

বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত কৃষক উকিল বর্মন, বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলেন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি

শুধু সি-ফেসিং নয়, হোটেল হতে হবে মন্দির-ফেসিং, দিঘায় তুঙ্গে চাহিদা

বিজেপি বনাম বিজেপি, পশ্চিম মেদিনীপুরের রাস্তায় দুই গোষ্ঠীর মারপিট

আইএসসি পরীক্ষায় রাজ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম স্থানে কোচবিহারের আত্রেয়ী-অনুষ্কা

আইসিএসই পরীক্ষায় ৯৯.‌০৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিল হুগলির পড়ুয়া

অনুষ্ঠানে গিয়ে আচমকা অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি সাংসদ সৌগত রায়

সভাপতির নাম ঘোষণা হতেই শুরু হল তুমুল বাগবিতণ্ডা, সাংসদের সঙ্গে তর্কাতর্কি বিদায়ী সভাপতির

'ভগবানের কাছে এসেছি, যাঁরা বুঝতে পারছেন না ভগবান তাঁদের সুমতি দিন', দিঘায় জগন্নাথধাম দর্শনের পর জানালেন দিলীপ

স্ত্রীকে খুনের পর দুই শিশু সন্তানের গলায় ভোজালি ধরে ঘরবন্দি, ঘটনা হার মানাবে ক্রাইম থ্রিলারকেও

সোশ্যাল মিডিয়া