আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৯৮৮ সালে এই দিনে আধুনিক ক্রিকেটের সৃষ্টিকর্তাকে পায় দেশ। যে লড়াকু মনোভাব, হার না মানা আচরণ এবং শৃঙ্খলা দিয়ে ১.৪ কোটি ভারতবাসীর মন জয় করে নেয়। ক্রিকেট মাত্র কয়েকটি দেশে খেলা হলেও কোহলি এই খেলাকে আরও ছড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের ঘরে ঘরে, মনের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিয়েছে। বুধবার ৩৭ বছরে পা দিলেন বিরাট। কেরিয়ারের সায়াহ্নে চলে এসেছেন। সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। তবে যাবতীয় পরিসংখ্যানের অন্তরালে রয়েছে আরও একটি গল্প। ভারতীয় ক্রিকেটকে পাল্টে ফেলার। শুধু ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের ভোল বদলে ফেলেন। কোহলির ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করে হার না মানা মনোভাব। শেষ মিনিট পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করার ক্ষমতা। 

রাজধানীতে জন্ম। একজন উগ্র দিল্লির ছেলে থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের স্তম্ভ। যাত্রা দীর্ঘ। ভারতীয় ক্রিকেটে প্রথম আগ্রাসন আনেন সৌরভ গাঙ্গুলি। সেটা ধরে রাখেন বিরাট। তাঁর জমানায় সেটা প্রোঅ্যাক্টিভ অ্যাখ্যা পায়। এই আগ্রাসন, আক্রমণাত্মক ভূমিকা দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০ এর বেশি শতরান। একদিনের গড়ও চোখ ধাঁধানো। তাঁর নেতৃত্বে ফিটনেস অগ্রাধিকার পায়। শুধুমাত্র নিজের নয়, ভারতীয় জার্সি পরিহিত সকলের থেকে সেরাটা চাইতেন কোহলি। ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক পরিবর্তন এনেছেন। হাসিখুশি মোটাসোটা একটি ছেলে থেকে দায়িত্বশীল বাবা। যার জীবনে ভারসাম্য রয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ছাপ পড়ে খেলায়। অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে তাঁর পার্টনারশিপ একটি দৃষ্টান্ত। ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং সাপোর্টের পরিচয় দেন এই তারকা জুটি। 

টি-২০, টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ ফুরিয়ে যাননি। প্রায় সাত মাস পরে অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করেন বিরাট। প্রথম দুই ম্যাচে শূন্য করলেও, শেষ একদিনের ম্যাচে রান পান। ৭৪ রান করেন। তাঁর ভেতরের আগুন যে এখনও নিভে যায়নি, সেটা বুঝিয়ে দেন। বয়সের সঙ্গে তাঁর রানের খিদের কোনও সম্পর্ক নেই। আর মাইলস্টোন তাড়া করার প্রসঙ্গ নেই। এবার উপভোগের পালা। ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে চান। ২০২৩ বিশ্বকাপে অল্পের জন্য আশাহত হয়েছেন। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছে। তাই ২০২৭ বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন বিরাট। ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। কিন্তু তখন সবে মাত্র আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেন। এখন তিনি সেই ফরম্যাটে রাজা। তাই নিজের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত না করে বাইশ গজকে বিদায় জানাতে চান না। নিজের ৩৭তম জন্মদিনে হয়তো তেমনই অঙ্গীকার নিয়ে ফেললেন কোহলি।