আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্যারিস অলিম্পিকের পোডিয়ামে দেশের পতাকা জড়িয়ে রুপো গলায় পোজ দেওয়া হয়নি। কে বলতে পারে, পদকের রংও বদলাতে পারত। কিন্তু ফাইনালেই নামা হয়নি ভিনেশ ফোগাতের। তবে গ্রামে পা রাখতেই পেলেন সোনার পদক। বিশাল অভ্যর্থনা জানানো হল ভারতীয় কুস্তিগিরকে। যা সাময়িকভাবে হলেও হয়তো ভিনেশের ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেবে। শনিবার প্যারিস থেকে দেশে ফিরতেই দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। কয়েক হাজার মানুষ বিমানবন্দরের বাইরে জমায়েত হয়েছিল। তারপর খোলা জিপে করে ভিনেশকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই রোড শোতে দেশবাসীর সংখ্যা আরও দ্বিগুণ ছিল। দিল্লি থেকে বালালি যাওয়ার পথে বিভিন্ন গ্রামে ভক্তরা এবং পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাঁকে সংবর্ধিত করা হয়। ১৩৫ কিলোমিটারের পথ পেরোতে প্রায় ১৩ ঘণ্টা লেগে যায়। 

গ্রামে পা রাখতেই চমক অপেক্ষা করছিল ভিনেশের জন্য। গ্রামের বয়স্করা তাঁর গলায় সোনার পদক পরিয়ে দেয়। ওঠে স্লোগান। হাসিমুখে, দু'হাত জোড় করে সেটা গ্রহণ করেন ভারতীয় কুস্তিগির। চোখের কোণে জল চিকচিক করছিল। হয়তো ভাবছিলেন, যদি এটা প্যারিসে হত! গ্রামে পৌঁছতে মাঝরাত পেরিয়ে গেলেও, মানুষের ঢল নেমেছিল ছোট্ট গ্রামে। জমায়েতে ছিল দেখার মতো। সবাই গ্রামের সোনার মেয়ের অপেক্ষায় ছিল। মানুষের এই আবেগ, ভালবাসায় আপ্লুত ভিনেশ। তিনি জানান, গ্রামের মহিলাদের কুস্তিতে ট্রেনিং দিতে চান তিনি। যাতে তাঁরা ভবিষ্যতে ভিনেশকেও ছাপিয়ে যেতে পারে। 

ভিনেশ বলেন, 'এই গ্রাম থেকে ভবিষ্যতে আর কোনও কুস্তিগির না উঠলে সেটা হতাশজনক হবে। আমরা সেই রাস্তা দেখিয়েছি। বাকিদের আশা দিয়েছি। গ্রামের মহিলাদের পাশে থাকার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করব। ভবিষ্যতে আমাদের গ্রামের নামকে আরও উজ্জ্বল করতে আপনাদের সমর্থন এবং আস্থা দরকার। ওরাও অনেক কিছু পেতে পারে। শুধু পাশে থাকুন, সমর্থন করুন। এত ভালবাসা এবং সম্মান দেওয়ার জন্য আমি সারা জীবন আমার দেশ এবং গ্রামের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। আমি কুস্তিতে যা শিখেছি, সেটা আমার গ্রামের বোনদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইব। আশা করব ওরা একদিন আমাকেও ছাপিয়ে যাবে। তখন আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারব, ও আমার গ্রামের মেয়ে। আমি ওকে ট্রেনিং দিয়েছি। আমি চাই, আমার রেকর্ড যেন আমার গ্রামের মেয়েরাই ভাঙে। মাঝরাত পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।' গ্রামের বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় আরও একবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন ভিনেশ।