আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলার জেরে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠান ভন্ডুল হয়ে যাওয়ার দায়ে মোট গ্রেপ্তার ছয়। শতদ্রু দত্ত ছাড়াও আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সোমবার সবাইকে কোর্টে তোলা হবে। অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে। তারপর আরও দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের নাম শুভপ্রতিম দে এবং গৌরব বসু। সোমবারই তাঁদের আদালতে তোলা হবে। মূলত স্টেডিয়াম ভাঙচুরের অভিযোগে এই দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারমধ্যে একজনকে দেখা যায় মেসির ১০ নম্বর বার্সিলোনার জার্সিতে। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক চার্জ রয়েছে। এবার আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করল বিধাননগর পুলিশ। ধৃতদের নাম বাসুদেব দাস, সঞ্জয় দাস এবং অভিজিৎ দাস। এদের তিনজনের বিরুদ্ধেও স্টেডিয়াম ভাঙচুরের অভিযোগ। এছাড়াও জানা গিয়েছে, ছ'জনকে নোটিস পাঠাতে চলেছে বিধাননগর পুলিশ।
গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ভাঙচুর ঘটনায় কারা জড়িত সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তাঁদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, যাদের তলব করা হয়েছে, তাঁরা মেসির অনুষ্ঠানের সঙ্গে কোনওভাবে জড়িত। শনিবার ঘটনার পর দমদম বিমানবন্দর থেকে প্রথমে আটক করা হয় শতদ্রু দত্তকে। পরে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাঁর ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। মেসি অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা হলেও, এই বিশৃঙ্খলার জন্য আরও কয়েকজন জড়িত। তাই শতদ্রুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
মেসি গোট সফরের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত। তিনদিনের সফরে চারটে শহর ঘোরার কথা ফুটবলের জাদুকরের। তারমধ্যে শুরুটা হয় কলকাতা দিয়ে। যা চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। মাত্র ২৩ মিনিট মাঠে ছিলেন মেসি। কিন্তু তারমধ্যেও তাঁকে দেখতে পায়নি সমর্থকরা। হাজার হাজার টাকার টিকিট কেটে গ্যালারি ভরিয়েছিল মেসি ভক্তরা। কিন্তু তারকা ফুটবলারকে নেতা, আমলারা ঘিরে রাখায় গ্যালারি থেকে মেসিকে দেখতেই পায়নি সমর্থকরা। তাঁর সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য, ছবি তোলার জন্য মাঠে একাধিক লোকজন জমায়েত হয়। বেশ কয়েকবার তাঁদের সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। যার ফলে মেসির ব্যক্তিগত টিম কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি। মাত্র ২৩ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন মেসি। সৌরভ গাঙ্গুলি, শতদ্রু দত্তের অনুরোধ সত্ত্বেও মাঠে থাকতে রাজি হননি মেসি। তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে থাকার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং শাহরুখ খানের। সেই অনুষ্ঠানে শুরুর আগেই মেসি যুবভারতী ছেড়ে বেরিয়ে যান। তারই রেশ পড়ে।
এত টাকা খরচ করে মাঠে এসেও প্রিয় তারকাকে দেখাতে না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে যায় সমর্থকরা। প্রথমেই গোটা স্টেডিয়ামে লাগানো মেসির ছবি, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। তারপর শুরু হয় ভাঙচুর। প্রথমে মাঠে জলের বোতল পড়ে। তারপর চেয়ার ভাঙা হয়। গোলপোস্টের নেট ছিঁড়ে ফেলা হয়। ক্যানোপিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দেদারে চলে স্টেডিয়াম ভাঙচুর। গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে পড়ে সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ। অন্যদিকে হায়দরাবাদ এবং মুম্বইয়ে সুষ্ঠুভাবে চলে মেসির অনুষ্ঠান। দুই শহরের নেতা, মন্ত্রী, তারকা ফুটবলার, বলিউডের তারকারা থাকা সত্ত্বেও কোনওরকমের বিশৃঙ্খলা হয়নি। সোমবার দিল্লি মাতাবেন মেসি। এদিনই ভারতে তাঁর শেষ দিন। বিমান দেরী করায় নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ পরে দিল্লি পৌঁছন মেসি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা তাঁর। রাতে প্রাইভেট জেটে নিজের দেশে পাড়ি দেবেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
