আজকাল ওয়েবডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেস বোলার মিচেল স্টার্ক অ্যাশেজের ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখলেন। শনিবার পার্থে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিলেন তিনি।

১২ বছর পর কোনও পেসার হিসেবে অ্যাশেজে এই নজির গড়লেন। দুরন্ত স্পেলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ দু’বারই ভেঙে দেন স্টার্ক। হ্যাজলউড, কামিন্স ছাড়াই স্টার্ক আবারও প্রমাণ করলেন চাপের ম্যাচেই তিনি সবচেয়ে মারাত্মক।

প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ছন্দ বজায় রাখেন স্টার্ক। নতুন বলে প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন ওপেনার জ্যাক ক্রলিকে। দ্বিতীয় ইনিংসেও শূন্য রানে বিদায় জানান ইংলিশ ব্যাটারকে।

দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র পাঁচ বল টিকতে পেরেছিলেন ক্রলি। এবারও স্টার্কের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড। জো রুটও বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। স্টার্কের বোলিংয়ে ক্রমাগত চাপে পড়ে উইকেট দেন তিনি।

তবে সবচেয়ে বড় মুহূর্ত আসে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে, যখন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে দেন স্টার্ক। ম্যাচের প্রথম দিন পাঁচ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন স্টোকস।

কিন্তু এদিন ১১ বলে মাত্র ২ রান করেই স্টিভ স্মিথের হাতে স্লিপে ধরা পড়েন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের গতিপথ নিজেদের দিকেই রাখেন স্টার্ক।

চলতি অ্যাশেজের প্রথম ম্যাচে এই অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেললেন স্টার্ক। তিনি হলেন তৃতীয় বোলার যিনি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ উইকেটের অঙ্কে পৌঁছলেন।

তালিকায় অন্য দুই অস্ট্রেলিয়ান নাথান লিয়ন ও প্যাট কামিন্সের সঙ্গেই নাম উঠে এল তাঁর। অ্যাশেজ ইতিহাসে অন্যতম সেরা বোলিং প্রদর্শন হিসেবে ধরা হচ্ছে এই কীর্তিকে।

এর আগে ২০১৩ সালে স্টুয়ার্ট ব্রড শেষবার পেস বোলার হিসেবে অ্যাশেজে ১০ উইকেট নেন (১১ উইকেট, চেস্টার-লে-স্ট্রিট)। এর আরও আগে স্মরণীয় পারফরম্যান্স রয়েছে জেমস অ্যান্ডারসন (২০১৩, নটিংহ্যাম), ক্রেগ ম্যাকডারমট (১৯৯১, পার্থ) এবং ডেনিস লিলি (১৯৮১, দ্য ওভাল)—যাঁরা ১০ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছিলেন।

পার্থে স্টার্কের এই পারফরম্যান্স শুধু ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে সুবিধা এনে দেয়নি, বরং বারবার ম্যাচে ফিরতে সাহায্য করেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ডাকেট এবং অলি পোপকে বিপজ্জনক দেখাচ্ছিল সেই সময়েই অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফেরান বাঁ হাতি পেসার। পুরোদমে ছুটলে মিচেল স্টার্ক এখনও বিশ্বের যেকোনও ব্যাটিং লাইনআপের কাছে দুঃস্বপ্ন, সেটাই প্রমাণ করে দিল অ্যাশেজের চলতি টেস্ট।