আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্যাট-প্যাড তুলে রেখেছেন ১১ বছর হল। বীরেন্দ্র শেহবাগ এখনও দেশের বিধ্বংসী ওপেনার হিসেবে সমাদৃত। বল দেখো, বল মারো এই দর্শন দারুণ হিট। সেই বীরু গ্রেগ চ্য়াপেল জমানার কথা নতুন করে উত্থাপ্পন করেছেন। সেই সময়ে বীরু রান পাচ্ছিলেন না। নজফগড়়ের নবাবকে চাগিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতীয় দলের হেডস্যর গ্রেগ চ্যাপেল বলেছিলেন, ''তোমার পা না নড়লে তুমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রান করতে পারবে না।''
চ্যাপেলকে জবাবে বীরু বলেছিলেন, ''গ্রেগ, আমি টেস্ট ক্রিকেটে ৬ হাজার রান করেছি। গড় পঞ্চাশেরও বেশি।'' গ্রেগ জবাবে বলেছিলেন, ''ওটা কোনও ব্যাপার নয়। আবার আমাকে বলেন, তোমার পা না নড়লে তুমি রান পাবে না আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আমাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছিল।''
আরও পড়ুন: হতে পারতেন বড় চাকুরে, ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকা ডুরান্ড ফাইনালে থামিয়ে দিলেন 'বন্ধু' জবির দৌড়...
রাহুল দ্রাবিড় তখন ভারতের অধিনায়ক। আমাদের মধ্যে তর্কে জল ঢালার জন্য এগিয়ে এসেছিল রাহুল। আমাদের আলাদা করে দেয়। বীরু বলে চলেন, ''পরের দিন আমি যখন ব্যাট করতে যাচ্ছি, তখন গ্রেগ আমাকে বলেন, রান যদি না করতে পারো তাহলে তোমাকে বাদ দিয়ে দেবো। গ্রেগের কথা শুনে আমার মনে হয়েছিল, যা পারো কর। কল্পনা করে দেখুন, একজন ব্যাটার ব্যাট করতে নামছে, আর তখন সে এই ধরনের মন্তব্য। শুনছে কোচের কাছ থেকে।''
লাঞ্চের আগেই শেহবাগ ৯৯-এ পৌঁছে যান। ড্রেসিং রুমে যখন ঢুকতে চলেছেন বীরু, তখন সামনে দাঁড়িয়ে রাহুল দ্রাবিড়। পুরনো স্মৃতি আওড়ে বীরু বলেন, ''আমি দ্রাবিড়কে বলেছিলাম, তোমার কোচকে আমার সামনে আসতে বারণ করে দাও। লাঞ্চ সেরে আমি আবার ব্যাট করতে শুরু করি। চা পানের বিরতির আগে আমি ১৮৪ রান করে আউট হয়ে যাই। ড্রেসিং রুমে ফেরার পরে চ্য়াপেলের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, ''পা নড়ুক বা না নড়ু, কিছু যায় আসে না। আমি জানি কীভাবে রান করতে হয়।''
গুরু গ্রেগ জমানার কথা সবারই জানা। সৌরভ গাঙ্গুলিকে ছেঁটে ফেলেছিলেন তিনি। বহু ক্রিকেটার সেই সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন। সম্প্রতি মুখ খুলেছেন ইরফান পাঠানও। তিনি বলেন, ''সিনিয়র ও জুনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার করতেন। সবাইকেই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন। আমাদের থেকেও বেশি আগ্রাসী ছিলেন। পারফর্ম করতে না পারলে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে, সবার সামনেই বলতেন। আমার মনে হয়েছিল, এই ধরনের নীতি খুবই কড়া। চ্যাপেলের সঙ্গে আমি আলাদা করে কথাও বলেছিলাম।''
কী কথা হয়েছিল চ্যাপেলের সঙ্গে? পাঠান বলেন, ''কেউ পারফর্ম করতে না পারলে এমনিতেই মুষড়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়। সেটাই আবার বললে দলের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। প্রথমদিকে হতাশ হয়েছিলেন চ্যাপেল। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন আমিই ঠিক।''
পাঠান আরও বলেন, ''আমি যদি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা বা ইংল্যান্ডে কোচ হিসেবে যাই এবং সেই দেশের সংস্কৃতি না মেনে চলি, তাহলে ওই দেশের খেলোয়াড়রা কি আমাকে মেনে নেবেন? গ্রেগ চ্যাপেলের উদ্দেশ্যটা ঠিক ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি আমদানি করতে চেয়েছিলেন তিনি। উনি চেয়েছিলেন আমরা হার্ড ক্রিকেট খেলি। তবে বিষয়টা অন্যভাবেও উনি সামলাতে পারতেন।''
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে কি সূর্যোদয় হবে? প্রাক্তন তারকা ভারতকে এগিয়ে রাখছেন কেবল একজনের জন্যই, কে তিনি? ...
