আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের মেয়েরা বিশ্বকাপ জেতার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে মারাত্মকভাবে ট্রোল করা হয় সৌরভকে।

কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে মেয়ে সানার ক্রিকেট খেলা নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন সৌরভ। সেই সংক্রান্ত পুরো ইন্টারভিউ না দিয়ে, একটি নির্দিষ্ট অংশ তুলে ধরা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

যা নিয়ে মুন্ডুপাত করা হয় সৌরভের। মেয়েদের বিশ্বকাপ জয়ের সময় সানার জন্মদিন পালন করতে লন্ডনে ছিলেন সৌরভ। এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি।

সোমবার শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে অ্যাল ক্রিকেট ডিভাইস কাবুনির উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সৌরভ।

পাশাপাশি জানান, বিশ্বকাপ শুরুর আগেই তাঁর মনে হয়েছিল ভারতের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। সৌরভ বলেন, 'একটা সাক্ষাৎকারের নির্দিষ্ট অংশ তুলে ধরা হয়েছে। এই নিয়ে ভাবি না। কিছু যায় আসে না। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আমার মনে হয়েছিল ভারতের মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। কারণ আমি ওদের যাত্রা খুব কাছ থেকে দেখেছি। কিন্তু প্রকাশ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। ক্রিকেটে আগাম কিছু বলা যায় না। রিচা বলে বলে ছয় মেরেছে। ভারতীয় মেয়েরা আরও উন্নতি করবে। অনেক এগোবে। গত ছয় বছরে মেয়েদের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়েছে। আমি একদম সামনে থেকে দেখেছি। দিল্লি ক্যাপিটালসে ছিলাম। অনেকটা সময় ওদের সঙ্গে কাটিয়েছি। মেয়েদের ক্রিকেট অন্য পর্যায় চলে গিয়েছে। এখান থেকে শুধুই এগোবে।' 

কাকতালীয়ভাবে ২৫ বছর আগে এমনই একটি দিনে অধিনায়ক হয়েছিলেন সৌরভ। একই দিনে নতুন একটি উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হলেন। বিশেষ দিনটিতে ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যান মহারাজ।

ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখেন। ফিরে যান ১৯৯৬ সালে। লর্ডসে। সৌরভ বলেন, 'কাকতালীয়ভাবে ২৫ বছর আগে আমি প্রথম অধিনায়ক নির্বাচিত হই। এই দিনেই অধিনায়ক করা হয় আমাকে। টেস্ট জিতি এবং ভারতীয় দলকে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিই। কোনও কিছুই বদলায়নি। এখনও কোনও না কোনও লিডারশিপ ভূমিকায় আছি। আমরা টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটের যুগে বেড়ে উঠেছি। পরবর্তীতে টি-২০ এসেছে। ক্রিকেট অনেকটাই বদলে গিয়েছে। অবিশ্বাস্য প্রতিভা রয়েছে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে। তারপর আইপিএল, ডব্লুপিএল এসেছে। পরিকাঠামো আরও উন্নত হয়েছে। ভাল খেলার পুরস্কার পাচ্ছে ক্রিকেটাররা। আমি জানতাম দলে টিকে থাকতে হলে আমাকে ভাল খেলতেই হবে। ১৯৯৬ সালে অভিষেক টেস্টে লর্ডসে শতরান করি। বর্তমানে প্রত্যেক শহর এবং গ্রামে প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। খেলাটা যেভাবে এগিয়েছে দেখে ভাল লাগে।' 

২৫ বছর আগে আজকের দিনে যেমন অধিনায়ক হয়েছিলেন, তেমনই ১৭ বছর আগে আজই অবসর নেন। নাগপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেন। তারপর থেকে একের পর এক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত রেখেছেন।

বাইশ গজের বাউন্ডারি লাইন পেরিয়েও পরবর্তী জীবনে একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন। যাই ছুঁয়েছেন, সোনা ফলেছে। সৌরভ গাঙ্গুলির বৃত্তি অনেকটাই বড়। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক জানান, সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন তিনি।

একের পর এক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। দাবি করেন, তিন নম্বরে ব্যাট না করলে এই জায়গায় পৌঁছতে পারতেন না। সৌরভ বলেন, 'অবসরের ১৭ বছর কেটে গেল। তারপর একের পর এক কিছু না কিছু করে চলেছি। ধারাভাষ্য থেকে শুরু করে, প্রশাসনিক কাজকর্ম। তারপর বোর্ডের সভাপতি হই। মেয়েদের আইপিএলের সঙ্গে যুক্ত হই। প্রিটোরিয়া দলের কোচ। টিভিতে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানও করি। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করে ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ছিল। বলে মুভমেন্ট ছিল। কেন আমি পরের দিকে নামতে চাইনি? আমি যদি তিন নম্বরে ব্যাট না করতাম, এখন যেখানে আছি, সেখানে পৌঁছতে পারতাম না। সুযোগ কাজে লাগাতে জানতে হয়। আমার চরিত্রে 'না' বলার জায়গা নেই। আমি সব চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করি। স্পোর্টস আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে হয়। জানতাম ভাল না খেললে আর সুযোগ পাব না। তাই নিজেকে সেই স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যেতে হয়েছে। সেরাদের সঙ্গে খেললে, নিজের সেরাটাও বেরিয়ে আসে।'

ক্রিকেটের অ্যাল ডিভাইসের উন্মোচনে এসে সৌরভ জানান, এই পদ্ধতি উন্নতমানের। মেয়েদের ক্রিকেটের উন্নতিতেও সাহায্য করবে। ক্রিকেটারদের টেকনিক্যাল দিকগুলো শোধরাতে সাহায্য করবে।