আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার শচীন তেন্ডুলকর সম্প্রতি ভক্তদের জন্য রেডিটে এক আকর্ষণীয় প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করেছিলেন। সেই সেশনে ভক্তরা মাস্টার ব্লাস্টারকে নানা প্রশ্ন করেছেন এবং ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ শচীনের কাছ থেকে পেয়েছেন অজানা কাহিনি ও মজার উত্তর। শচীন, যিনি ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ক্রিকেটের ঈশ্বর’ নামে পরিচিত, আস্ক মি এনিথিং সেশনে তাঁর খেলার দিনগুলির অনেক স্মৃতি শেয়ার করেছেন। বিশেষভাবে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা ও প্রয়াত শেন ওয়ার্নের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথাও উঠে এসেছে। এক ভক্ত প্রশ্ন করেন, তিনি কি কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল শট খেলেছেন শুধু বোলারের রিদম ভাঙতে? উত্তরে শচীন বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেকবার করেছি। বিশেষ করে ২০০০ সালে নাইরোবিতে ম্যাকগ্রার বিরুদ্ধে খেলার কথা মনে পড়ছে’।

শচীন আসলে ২০০০ সালের আইসিসি নকআউট ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালের কথা বলছিলেন। ওই ম্যাচে তিনি সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে ৬৬ রানের দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি গড়েন। শচীন ৩৭ বলে ৩৮ রান করেন, যেখানে দুটি চার এবং তিনটি ছক্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত যুবরাজ সিংয়ের অভিষেক ম্যাচে ৮০ বলে ৮৪ রানের ইনিংসের সুবাদে ভারত ২০ রানে জয় অর্জন করে। প্রশ্নোত্তর পর্বে শচীনের কাছে আরেকটি প্রশ্ন আসে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার স্টিভ বাকনারকে নিয়ে। হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে শচীন উত্তর দেন, ‘আমি যখন ব্যাটিং করব, ওঁকে বক্সিং গ্লাভস দিয়ে দেওয়া হোক, যাতে আঙুল তুলতে না পারেন’। শচীন আরও স্মৃতিচারণা করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট-কে প্রথম দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে।

আরও পড়ুন: রোদের দেখা মিললেও এখনই রেহাই নেই, আবার আসছে নিম্নচাপ, বাংলায় ফের কবে থেকে বৃষ্টি জানেন?

তিনি বলেন, ‘১৩,০০০ টেস্ট রান পার করা অসাধারণ। ২০১২ সালে নাগপুরে তাঁর অভিষেক টেস্টে প্রথম দেখার সময়ই সতীর্থদের বলেছিলাম, রুট ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ অধিনায়ক। উইকেট বুঝে খেলা এবং স্ট্রাইক রোটেট করার দক্ষতা দেখে নিশ্চিত হয়েছিলাম, ও একদিন বড় খেলোয়াড় হবে’। এই প্রশ্নোত্তর পর্বটি শচীনের ক্রিকেট কেরিয়ারের অজানা কাহিনি ও নানা স্মৃতি ভক্তদের সামনে তুলে এনেছে। প্রসঙ্গত, চেতেশ্বর পূজারার অবসরের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় টেস্ট দলের এককালীন 'মেরুদণ্ড'র প্রশংসা করেন শচীন। ভারতীয় ক্রিকেটে ১৫ বছরের অবদানের জন্য কুর্নিশ জানান। শচীন বলেন, 'পূজারা, সবসময় তোমাকে তিন নম্বরে নামতে দেখে আশ্বস্ত লাগত। তুমি শান্ত এবং সাহসী। চাপের মুহূর্তে তোমার টেকনিক, ধৈর্য এবং সংগঠিত মনোভাব দলের সম্পদ ছিল।'

২০১৮-১৯ বর্ডার-গাভাসকর সিরিজ পূজারার টেস্ট কেরিয়ারের অন্যতম সাফল্য। ম্যারাথন ইনিংস খেলেন। ১২৫৮ বল ক্রিজে টিকেছিলেন। মোট ৫২১ রান করেন। গড় ৭৪.৪২। যা সিরিজে সর্বোচ্চ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারত মাত্র ১৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর পরিত্রাতার ভূমিকা নেন পূজারা। কিংবদন্তি মনে করেন, তাঁকে ছাড়া সিরিজ ২-১ এ জেতা সম্ভব হত না ভারতের। শচীন বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৮ সিরিজ জয় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। পূজারার ম্যাচ উইনিং রান ছাড়া এটা সম্ভব হত না। অসাধারণ কেরিয়ারের জন্য অভিনন্দন। পরের পর্বের জন্য শুভেচ্ছা। দ্বিতীয় ইনিংস উপভোগ করো।' বরাবর লাল বলের ক্রিকেটকে অগ্রাধিকার দেন পূজারা। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে টেস্ট অভিষেক হয়। ভারতের হয়ে ১০৩টি টেস্ট খেলেন। খেলেন পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিকও। দু'বছর আগে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন। বেশ কিছুদিন অপেক্ষার পর, অবসরের সিদ্ধান্ত নেন।