আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ শনিবার থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। ইডেনে প্রথম টেস্ট হারতে হয়েছে। তাই দ্বিতীয় টেস্ট জয় ছাড়া গতি নেই টিম ইন্ডিয়ার। আর ড্র বা হারলে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ খোয়াতে হবে।


তবে গুয়াহাটির বরষাপাড়ার উইকেট ইডেনের মতো নয়। গিলের বদলে নেতৃত্ব দিতে চলা ঋষভ পন্থ উইকেট দেখে খুশি। তবে অখুশি মাত্র একটি টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়ে।


শুক্রবার ম্যাচের আগের দিন প্রথামাফিক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন পন্থ। নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। পন্থ জানিয়েছেন, এভাবে এক ম্যাচের জন্য নেতৃত্ব পাওয়ায় তিনি খুশি নন। পন্থ বলেছেন, ‘একটা ম্যাচের জন্য নেতৃত্ব পাওয়াটা ভাল বিষয় নয়। তবে এই সম্মান দেওয়ার জন্য আমি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে কৃতজ্ঞ। অনেক সময় আপনি বড় কোনও বিষয় নিয়ে ভাবতে পারেন। তাতে লাভ কিছু হয় না। আমিও এটা নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। প্রথম টেস্টটা আমাদের ভাল যায়নি। এই ম্যাচটা জেতার জন্য আমাদের যা যা করা প্রয়োজন, তা আমাদের করতে হবে।’ পন্থ বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুভমানের চোটের জন্য তাঁকে দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতি কাম্য নয়। তাই এক ম্যাচের নেতৃত্ব নিয়ে না ভেবে ম্যাচ জেতাকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন পন্থ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সকলে জানি কী করে ক্রিকেট খেলতে হয়। মাঠে কেমন আচরণ করতে হয়। শেষ টেস্টটা আমরা ভাল খেলতে পারিনি। কিন্তু আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। সামনে এগোতে হবে। গুয়াহাটিতে জেতার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, আমাদের করতে হবে। আমরা শুধু জয় নিয়েই ভাবতে চাইছি।’


ইডেন গার্ডেন্সের পিচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ব্যাটাররা সমস্যায় পড়েছিলেন। গুয়াহাটির ২২ গজ দেখে স্বস্তি পেয়েছেন পন্থ। তিনি বলেছেন, ‘এই মাঠে এটাই প্রথম টেস্ট। সকলের মধ্যে একটা আলাদা আবেগ রয়েছে। পিচ দেখে ভালই মনে হয়েছে। ব্যাট করার জন্য ভাল পিচ। কয়েক দিন পর হয়তো স্পিনাররা সাহায্য পাবে। আশা করছি, ভাল লড়াই হবে।’


সিরিজে সমতা ফেরানোর প্রস্তুতি নিয়ে পন্থ বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে প্রচুর আলোচনা হয়। আগের টেস্টে আমাদের মনে হয়েছিল, বেশি স্পিনার খেলালে লাভ হবে। এক জন বাড়তি জোরে বোলার খেলানোর সুযোগ সব সময় থাকে। আবার অন্য কেউ উইকেট পেলে মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। অধিনায়কদের কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জ। প্রশ্নের মুখে পড়তেই হয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা, বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মাঠে বোলারদের পাশে থাকতে হয় অধিনায়ককে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে চাপ থাকবেই। এই পর্যায়ে সব সময় চাপ থাকে। হতে পারে আমরা সিরিজে ০–১ ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছি। কিন্তু এ সবের ভিত্তিতে খেলা যায় না। মাঠে আমরা সব সময় চেষ্টা করি ২০০ শতাংশ দেওয়ার।’


শুভমান গিলকে ভারতীয় দল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পন্থ বলেছেন, ‘‌শুভমানের সঙ্গে তো রোজই কথা হয়। আগের চেয়ে ভাল আছে। এই ম্যাচটা ও ভীষণ ভাবে খেলতে চেয়েছিল। শারীরিক সমস্যা উপেক্ষা করে খেলতে চাইছিল। অধিনায়ক ব্যথা–যন্ত্রণা ভুলে মাঠে নামার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলে, বাকি দলের মধ্যেও একটা জেদ তৈরি হয়। দলের মানসিকতাই অন্য রকম হয়ে যায়।’ তবে শুভমানের জায়গায় কাকে খেলানো হবে তা খোলসা করেননি পন্থ। শুধু বলেছেন, ‘‌যাঁকে খেলানো হবে, সে কিন্তু সেটা জানে।’‌ পন্থ আরও বলেছেন, ‘অধিনায়ক হিসাবে সতীর্থদের স্বাধীনতা দিতে চাই। শুধু খেলোয়াড়রাই নয়, দলের সঙ্গে থাকা সকলে নিজেরাই শিখুক এবং দলের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিক। নিজের অভিজ্ঞতা সব সময় অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আমি প্রস্তুত। প্রয়োজন হলে সকলকে সাহায্য করব।’


গুয়াহাটির বরষাপাড়া স্টেডিয়ামে টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে প্রথম নামবেন। পন্থ বেশ উত্তেজিত। তিনি বলেছেন, ‘এই মাঠটা আমার খুব প্রিয়। হৃদয়ের কাছের। এই মাঠেই একদিনের আন্তর্জাতিকে আমার অভিষেক। এখানেই প্রথম টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দেব। মাঠটা আমার ক্রিকেটজীবনে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।’‌