আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্ডার গাভাসকার ট্রফির মাঝেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অবসর ঘোষণা কার্যত হতবাক করে দিয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। বেশিরভাগেরই মতে, এখনও অনেক খেলা বাকি ছিল অশ্বিনের মধ্যে। ক্রিকেট দুনিয়ার অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে বিবেচিত সেই অশ্বিন হঠাৎই বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির মাঝপথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন। ব্রিসবেন টেস্টের শেষে অশ্বিনের এই সিদ্ধান্ত হতবাক করেছে ভারতীয় শিবিরকেও। ড্রেসিংরুমের সতীর্থরাও হতভম্ব হযে গিয়েছিলেন। জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস সবে শুরু করলেও এবার অশ্বিনকে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের অন্যতম সেরা ম্যাচ-জয়ী খেলোয়াড়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই চিঠিতে তাঁর অবসর ঘোষণাকে তুলনা করেছেন ভারতীয় স্পিনারেরই অন্যতম অস্ত্র ক্যারম বলের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো চিঠিতে উঠে এসেছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ক্রিকেট জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে উঠে এসেছে অশ্বিনের নাম।
প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, অশ্বিনের অবদান শুধুমাত্র ক্রিকেটের জন্য নয়, দেশের জন্যও গর্বের। তামিলনাড়ু থেকে উঠে এসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরেছেন অশ্বিন। অশ্বিনের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে পুরো ক্রিকেট মহল। প্রধানমন্ত্রী চিঠিতে অশ্বিনের কেরিয়ারের শুরু থেকে সিনিয়র হওয়ার যাত্রার বিভিন্ন কাহিনী তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে, টেস্ট অভিষেকে পাঁচ উইকেট নিয়ে তুমি নজর কেড়েছিলে। ২০১১ সালের ওডিআই বিশ্বকাপ জয়ী দলে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছিলে। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে শেষ ওভারে দলকে জয় এনে দেওয়ার সময় হয়ে উঠেছিলে দলের এক অপরিহার্য সদস্য। পরে, সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে দলের হয়ে সব ফরম্যাটে একাধিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছ তুমি।
অনেক সময় ক্রিকেটাররা তাদের কোনও না কোনও অসাধারণ শটের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকে। কিন্তু তোমার ক্ষেত্রে বিশেষত্ব হল, শুধু একটি অসাধারণ শটের জন্যই নয়, বরং ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ম্যাচে একটি শট এবং একটি বল ছাড়ার জন্যও সমানভাবে তুমি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জয়ের শটটি যেমন সমর্থকদের মধ্যে দারুণ উচ্ছ্বাস এনেছিল, তেমনই তার আগে বল ছেড়ে দিয়ে ওয়াইড করে দেওয়া তোমার উপস্থিত বুদ্ধির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। বিপদের সময়েও প্রতিশ্রুতি দেখা গিয়েছে বারবার। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ি ফিরে হাসপাতালে ভর্তি করে ফের দলের হয়ে খেলতে চলে গিয়েছিলে। পালন করেছিলে দায়িত্ব। আবার চেন্নাইয়ে বন্যার সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের হয়ে খেলে গিয়েছো। আশা করব ক্রিকেটের প্রতি কোনও না কোনও ভাবে তুমি আরও অবদান রাখবে। ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা’।
