আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডুরান্ড বিপর্যয়ের মধ্যেই মোহনবাগানে ভক্তদের জন্য মন ভাল করা খবর। অপ্টার বিচারে দেশের এক নম্বর ক্লাব সবুজ-মেরুন। সারা বিশ্বের নামী ক্লাবগুলোর ক্রমপর্যায়ে মোহনবাগান রয়েছে ১৭০১ নম্বরে। বিশ্বের অন্যন্য ক্লাবগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে অনেক পিছিয়ে তারা। মোহনবাগানের থেকে বহু পিছিয়ে ইস্টবেঙ্গল। অপ্টা র্যাঙ্কিংয়ে লাল-হলুদ ৪০৮০-তে। পার্থক্যটা অনেকটাই। গত সাত দিনে ইস্টবেঙ্গল ৬৯ ধাপ নেমেছে। অন্যদিকে মোহনবাগান গত সাত দিনে ২৬ ধাপ উঠেছে।
গত মরশুমে দ্বিমুকুট জিতেছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। আইএসএল শিল্ড এবং কাপ জিতেছে মোহনবাগান। ধারবাহিকতা দেখিয়েছে। তারই স্বীকৃতি পেয়েছে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের র্যাঙ্কিংয়ে আকাশপাতাল পার্থক্য হলে চলতি মরশুমে দুই প্রধানের দেখা হয়েছে দু'বার । প্রথমবার কলকাতা লিগে। দ্বিতীয়বার ডুরান্ড কাপে। দুই ক্ষেত্রেই শেষ হাসি তোলা ছিল ইস্টবেঙ্গলের জন্য।
আরও পড়ুন: কোহলি-রোহিতের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় মন্তব্য বোর্ড কর্তার, কী বললেন?
এবারও মোহনবাগান দুর্দান্ত দল গড়েছে। তারা সম্প্রতি সই করিয়েছে মেহতাব সিংকে। ইস্টবেঙ্গলকে পেছনে ফেলে ট্রান্সফার মার্কেটে বড় লড়াই জিতল সবুজ মেরুন। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে বাগানে সই করেছেন বর্তমানে ভারতের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার।
মেহতাবের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করল বাগান। বড় অঙ্কের ট্রান্সফার ফি দিয়ে মুম্বই এফসি থেকে তাঁকে সই করাল কলকাতার প্রধান। বেশ কয়েকদিন ধরেই সবুজ মেরুনে আসার কথা শোনা যাচ্ছিল। কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। শনিবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হল। মেহতাবকে পেতে ঝাঁপিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলও। কিন্তু শেষপর্যন্ত বাগানে সই করলেন। গতবছর রক্ষণে দুই বিদেশি টম অ্যালড্রেড এবং অ্যালবার্তো রডরিগেজ ছাড়া কোনও বিকল্প ছিল না। কিন্তু মেহতাব যোগ দেওয়ায় প্রয়োজনে রক্ষণে এক বিদেশিকে বসিয়ে আক্রমণভাগের ফুটবলার নামাতে পারবেন হোসে মোলিনা।
ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পাঞ্জাবের ২৭ বছরের ডিফেন্ডারকে সই করাল বাগান। কলকাতায় চলে এসেছেন। শনিবার বিকেলেই মোহনবাগানের অনুশীলনে যোগ দেবেন। মুম্বইয়ের জার্সিতে দু'বার আইএসএল এবং শিল্ডজয়ী মেহতাবের যোগদানে মোলিনার দলের রক্ষণের শক্তি অনেকটাই বাড়বে। স্টপার ছাড়াও সাইড ব্যাকে খেলতে পারেন। কলকাতায় চার বছর খেলেছেন। ডার্বি খেলারও অভিজ্ঞতা আছে। ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে খেলেছেন। সইয়ের পর জানান, বরাবর মোহনবাগানে খেলার স্বপ্ন ছিল। মেহতাব বলেন, ''সব ফুটবলারেরই মোহনবাগানে খেলার স্বপ্ন থাকে। আমারও ছিল। সেই স্বপ্ন সফল হল। মোহনবাগান শক্তিশালী দল। দলে ভাল মানের বিদেশি এবং স্থানীয় ফুটবলার আছে। কোচও অভিজ্ঞ। আমার কাছে কলকাতার অন্য ক্লাবের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু মোহনবাগানে খেলতে পারলে নিজেকে আরও প্রতিষ্ঠিত এবং সমৃদ্ধ করতে পারব।''
কলকাতায় পা রেখেই জানিয়ে দিলেন ডার্বি জিততে চান। কেরিয়ারের শুরুতে লাল হলুদ জার্সিতে খেলেন। তখনও প্রতিষ্ঠিত হননি। এবার তারকা ফুটবলার হিসেবে কলকাতার আরেক প্রধানে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন। মেহতাব বলেন, ''কলকাতায় খেলার উত্তেজনা আলাদা। মোহনবাগানের সমর্থকরা দেশের সেরা। তাঁদের আবেগ আমি জানি। ডার্বি খেলার মজাই আলাদা। মোহনবাগান জার্সিতে ডার্বি জিততে চাই। স্বপ্ন ছাড়া কেউ বড় হতে পারে না। আশা করছি আমার ট্রফি ক্যাবিনেটে আরও কিছু ট্রফি যোগ হবে। আমার প্রাথমিক লক্ষ্য এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচ জেতা।''
মুম্বই এফসির হয়ে আইএসএল এবং লিগ শিল্ড দু'বার জেতেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলেছেন। মোহনবাগানে সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চান। মেহতাব বলেন, ''মুম্বই এফসির হয়ে আমি দু'বার আইএসএল এবং লিগ শিল্ড জিতেছি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলেছি। প্রথম দিন থেকেই সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। ১৬ সেপ্টেম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমাদের প্রথম ম্যাচ। মুম্বইয়ের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। দ্রুত দলের সবার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।'' শনিবার বিকেল থেকেই সবুন মেরুনে যাত্রা শুরু মেহতাবের।
