আজকাল ওয়েবডেস্ক: আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন মহম্মদ সিরাজ। ওভাল টেস্টের নায়ক তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছিলেন নয় উইকেট। ২৩ উইকেট নিয়ে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও তিনি। নিজের শহর হায়দরাবাদে ফিরেই রাজকীয় সংবর্ধনা পেলেন মহম্মদ সিরাজ। শীঘ্রই সিরাজকে সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার।
অ্যান্ডারসন–তেন্ডুলকার ট্রফিতে স্বপ্নের ফর্মে ছিলেন সিরাজ। ‘ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট’ ইস্যুতে সব টেস্ট খেলেননি জসপ্রীত বুমরা। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে খেলেন তিনি। ফলে সিরিজে সিরাজই কার্যত ভারতীয় পেস ব্রিগেডের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সবমিলিয়ে পাঁচ টেস্টে ১৮৫.৩ ওভার বল করেছেন তিনি, যা যে কোনও বোলারের থেকে বেশি। বিশেষত ওভাল টেস্টের শেষ দিনে একা হাতেই ইংল্যান্ড ব্যাটিং ধসিয়ে দেন সিরাজ। ম্যাচ শেষে ভারত অধিনায়ক শুভমন গিলও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন সিরাজের।
ঘরের ছেলের প্রত্যাবর্তনে খুশির হাওয়া হায়দরাবাদে। শীঘ্রই সিরাজকে সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার। সংবাদ সংস্থার কাছে হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা বলেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে সিরাজের এখনও কথা হয়নি। তবে আমরা ওকে সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা করব। আপাতত তো ও কিছুদিন শহরেই থাকবে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দেশের জার্সিতে ওর পারফরম্যান্স আমাদের কাছেও গর্বের বিষয়।’ তেলঙ্গানা পুলিশও সিরাজকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে। তেলঙ্গানা পুলিশ বলছে, মাঠের ভিতরে হোক বা বাইরে তেলঙ্গানা পুলিশ সর্বদা কর্তব্যে অবিচল।
আরও পড়ুন: ভিসা মিললেও এশিয়া কাপ হকি খেলতে ভারতে দল পাঠাতে রাজি নয় পাকিস্তান ...
ওভাল টেস্টে সিরাজের নায়কোচিত পারফরম্যান্সের পর প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী বলে দিয়েছিলেন, এবার হয়তো ডিএসপি থেকে এসপি পদে উন্নীত হবেন সিরাজ। স্বাভাবিকভাবেই গুঞ্জন, হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থা যেদিন সিরাজকে সংবর্ধনা দেবে সেদিন কি পুলিশের তরফেও তাঁর পদোন্নতির কথা ঘোষণা করা হতে পারে। যদিও পুলিশের তরফে এখনও কোনওরকম সরকারি ঘোষণা করা হয়নি।
এটা ঘটনা, শচীন তেন্ডুলকারের মতো কিংবদন্তি বলছেন, সিরাজ যথাযোগ্য সম্মান পান না। মাস্টার ব্লাস্টার বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য। অসাধারণ অ্যাপ্রোচ। সিরাজের মানসিকতা আমার পছন্দ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে বোলিং করার জন্য ওর দৌড় আমার ভাল লাগে। এরকম একজন ফাস্ট বোলারের লাগাতার মুখোমুখি হতে কারওরই ভাল লাগবে না। আমি ধারাভাষ্যকারদের বলতে শুনেছি, সিরিজে ১ হাজারের বেশি বল করার পরও সিরাজ ৯০ মাইল গতিতে বল করে গিয়েছে। এটাই সাহসিকতা ও বড় হৃদয়ের পরিচয়।’
লর্ডসে ট্র্যাজিক হিরো থেকে গিয়েছিলেন সিরাজ। শোয়েব বশিরের বলটা তাঁর ব্যাটে লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। সিরাজ সারা রাত ঘুমোতে পারেননি। খাননি পর্যন্ত। ভাগ্য দ্রুতই বদলে যায়। সেদিন তিনি ছিলেন ব্যর্থ এক নায়ক। ওভালে তিনিই নায়ক। ইংল্যান্ড থেমে যায় ৬ রান দূরে। সিরাজের জন্যই সমালোচনার হাত থেকে বেঁচে যান গৌতম গম্ভীর। প্রথমে নিউজিল্যান্ড, পরে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে ইংল্যান্ডে সিরিজ ড্র রাখল গম্ভীরের ভারত। মাস্টার ব্লাস্টার বলছেন, ‘পঞ্চম দিন যেভাবে সিরাজ শুরু করেছিল, তা এককথায় অসাধারণ। সিরিজ জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সিরাজ। যখনই ওকে দরকার হয়েছে, যখনই মনে হয়েছে মরণকামড়টা এবার দিক, তখনই সিরাজ নিজেকে নিংড়ে দিয়েছে। সিরাজ যেভাবে উইকেটগুলো নিয়েছে এবং পারফরম্যান্স তুলে ধরেছে, তার প্রাপ্য কৃতিত্ব কিন্তু পায় না।’
