আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ক্রিকেটে গুরু গ্রেগ অধ্যায় এখনও জীবন্ত।
গ্রেগ চ্যাপেল এই দেশে একইসঙ্গে নিন্দিত এবং অপছন্দের এক ব্যক্তিত্ব। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও গুরু গ্রেগ পর্ব সবারই জানা।
অনেক বলে থাকেন, ইরফান পাঠানকে অলরাউন্ডার বানাতে গিয়ে গ্রেগ চ্যাপেল তাঁর হাত থেকে কেড়ে নেন রামধনুর মতো বাঁক খাওয়ানো সুইং। যদিও ইরফান পাঠান তা স্বীকার করেন না। পাঠানের ব্যাটের হাত ভাল ছিল। গ্রেগ চ্যাপেল তাঁকে ওপেন করতে পাঠিয়েছিলেন।
গ্রেগ চ্যাপেল সম্পর্কে এবার মুখ খুললেন পাঠান। তিনি বলেন, ''সিনিয়র ও জুনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার করতেন। সবাইকেই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন। আমাদের থেকেও বেশি আগ্রাসী ছিলেন। পারফর্ম করতে না পারলে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে, সবার সামনেই বলতেন। আমার মনে হয়েছিল, এই ধরনের নীতি খুবই কড়া। চ্যাপেলের সঙ্গে আমি আলাদা করে কথাও বলেছিলাম।''
আরও পড়ুন: বছরে কত টাকা আয় শচীনপুত্রের? কত সম্পত্তির মালিক অর্জুন?
কী কথা হয়েছিল চ্যাপেলের সঙ্গে? পাঠান বলেন, ''কেউ পারফর্ম করতে না পারলে এমনিতেই মুষড়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়। সেটাই আবার বললে দলের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। প্রথমদিকে হতাশ হয়েছিলেন চ্যাপেল। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন আমিই ঠিক।''
পাঠান আরও বলেন, ''আমি যদি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা বা ইংল্যান্ডে কোচ হিসেবে যাই এবং সেই দেশের সংস্কৃতি না মেনে চলি, তাহলে ওই দেশের খেলোয়াড়রা কি আমাকে মেনে নেবেন? গ্রেগ চ্যাপেলের উদ্দেশ্যটা ঠিক ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি আমদানি করতে চেয়েছিলেন তিনি। উনি চেয়েছিলেন আমরা হার্ড ক্রিকেট খেলি। তবে বিষয়টা অন্যভাবেও উনি সামলাতে পারতেন।''
রামধনুর মতো বাঁক খাওয়ানো সুইংয়ে পাকিস্তানের তারকা ব্যাটাররা কুপোকাত। ২০০৬ সালে করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সলমন বাট, ইউনিস খান ও মহম্মদ ইউসুফকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ইরফান পাঠান। তবুও সেটা নাকি তাঁর পছন্দের মুহূর্ত নয়। প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক একমাত্র পাঠানই করেছেন। সেই রেকর্ড এখনও পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেননি।
কিন্তু স্মরণীয় মুহূর্তের ঝাঁপি খুলতে বসলে পাঠান অন্য পারফরম্যান্সের কথা তুলে ধরলেও করাচি টেস্টের প্রথম ওভারে হ্যাটট্রিকের প্রসঙ্গ টানেন না। কেন? বাঁ হাতি প্রাক্তন পেসার বলেন, ''পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওই হ্যাটট্রিক আমার জীবনের মোটেও স্মরণীয় মুহূর্তগুলোর মধ্যে পড়ে না। ওই ম্যাচ নিয়ে আমি বেশি কথাও বলি না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে আমি খুশি মনে কথা বলি। ২০০৪ সালে ১৯ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ নির্ণায়ক ম্যাচে আমি তিন উইকেট নিয়েছিলাম। সেটা অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। সেই ম্যাচের কথা বলি আমি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে পারথ টেস্টে ম্যাচের সেরা হয়েছিলাম। সেই ম্যাচ নিয়ে কথা বলি। কারণ ওই ম্যাচগুলোয় আমরা জিতেছিলাম।''
পাঠানের মতে, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে বলতে তখনই ভাল লাগে, যখন দল জেতে। তাঁর কথায়, ''যে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলাম, সেই ম্যাচটা আমরা জিতিনি। মানুষের অবশ্য পছন্দ সেই ম্যাচ। ওই হ্যাটট্রিকের ভিডিও আমাকে পাঠান অনেকে। ওই তিন ব্যাটসম্যান কুড়ি হাজারের বেশি রান করেছিল। বল যেভাবে সুইং করছিল, তা দৃষ্টিনন্দন ছিল। সেই কারণেই ভক্তরা পছন্দ করেছিল ওই হ্যাটট্রিক।''
