আজকাল ওয়েবডেস্ক: লর্ডসে ট্র্যাজিক হিরো থেকে গিয়েছিলেন সিরাজ। শোয়েব বশিরের বলটা তাঁর ব্যাটে লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। সিরাজ সারা রাত ঘুমোতে পারেননি। খাননি পর্যন্ত। ভাগ্য দ্রুতই বদলে যায়। সেদিন তিনি ছিলেন ব্যর্থ এক নায়ক। ওভালে তিনিই নায়ক। ইংল্যান্ড থেমে যায় ৬ রান দূরে।
মহাকাব্যিক সেই ম্যাচে মাঠের ভিতরেই লেগে গিয়েছিল সিরাজ ও ভারত অধিনায়ক শুভমান গিলের মধ্যে। জেতার আশায় মত্ত সিরাজ মুহূর্তের জন্য ভুলে গিয়েছিলেন গিল অধিনায়ক। তিনি প্রশ্ন করে বসেন ভারত অধিনায়ককে।
মাঠের ভিতরের কথা প্রকাশ্যে আনেন গিল স্বয়ং। কাঁধের হাড় সরে গিয়েছিল ক্রিস ওকসের। এক হাতে স্ট্র্যাপ বেঁধে শেষ দিনে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। রান নেওয়ার সময় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। তবুও কিন্তু ময়দান ছাড়েননি তিনি। ওকসের পার্টনার অ্যাটকিনসন ওভারের শেষ বলে রান নিচ্ছিলেন। কারণ ওকসের পক্ষে এক হাতে ব্যাট করা সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: কেরিয়ারের সেরা টেস্ট ব়্যাঙ্কিং, কত নম্বরে উঠে এলেন ওভালের নায়ক?
অ্যাটকিনসনকে রান আউট করার পরিকল্পনা করেন গিল ও সিরাজ। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কাজে আসেনি। আর তাতেই রেগে যান ভারতের তারকা পেসার। ক্যাপ্টেনের কাছে জবাবদিহি চান। ৮৪-তম ওভারের ঘটনা। অ্যাটকিনসনকে ওয়াইড ইয়র্কার দেওয়ার পরিকল্পনা করেন সিরাজ। কারণ ওয়াইড ইয়র্কার দিলে ছক্কা মারতে পারবেন না অ্যাটকিনসন। রান নেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি যাতে ওকস স্ট্রাইক না পান। সেই সুযোগে রান আউট করা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়াইড ইয়র্কারই করেন সিরাজ। অ্যাটকিনসন ব্যাটে বলে লাগাতে পারেননি। এদিকে রান নেওয়ার জন্য ছোটেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। ধ্রুব জুড়েলের হাতে বল গেলে তিনি রান আউট করার জন্য ছুড়ে দেন। বল উইকেটে লাগেনি। রান আউটও করা যায়নি।
এতেই চটে যান সিরাজ। গিল সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ''সিরাজ আমাকে বলেছিল ধ্রুব যেন গ্লাভস খুলে থাকে। তাহলে রান আউট করা সহজ হবে। সিরাজ যা বলেছিল তা ধ্রুবকে বলার আগেই বল করার জন্য দৌড় শুরু করে দিয়েছিল মিয়াঁ ভাই। ধ্রুবও আর গ্লাভস খোলার সময় পায়নি। ধ্রুবের ছোড়া বল উইকেটে লাগেনি। তাতে রেগে যায় সিরাজ। আমাকে বলে ওঠে, তুই বলিসনি কেন?''
সিরাজের চোখেমুখ তখন জ্বলছে। আরও একবার অ্যাটকিনসনের ক্যাচ যখন ফেলেন আকাশদীপ, তখন সিরাজ যেন বিশ্বাসই করে উঠতে পারছিলেন না।
শেষমেশ অবশ্য সিরাজ ভারতকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন।
সিরাজের মানসিকতার প্রশংসা করেছেন কিংবদন্তি শচীন তেণ্ডুলকর। মাস্টার ব্লাস্টার বলছেন, ''পঞ্চম দিন যেভাবে সিরাজ শুরু করেছিল, তা এককথায় অসাধারণ। সিরিজ জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সিরাজ। যখনই ওকে দরকার হয়েছে, যখনই মনে হয়েছে মরণকামড়টা এবার দিক, তখনই সিরাজ নিজেকে নিংড়ে দিয়েছে। সিরাজ যেভাবে উইকেটগুলো নিয়েছে এবং পারফরম্যান্স তুলে ধরেছে, তার প্রাপ্য কৃতিত্ব কিন্তু পায়না।'' সদ্য সমাপ্ত সিরিজ থেকে সিরাজ ২৩টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট দেবতাদের অসম্মান করেছে ইংল্যান্ড, সেই কারণেই ওভালে হার, অদ্ভুত যুক্তি দিলেন অশ্বিন ...
