আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের পেসার হ্যারিস রউফকে দুবাইয়ে ভারত বনাম পাকিস্তান সুপার ফোর ম্যাচে উস্কানিমূলক অঙ্গভঙ্গির জন্য ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে রউফ ভারতীয় ব্যাটারকে আউট করার পর বিমান ভেঙে পড়ার অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন, যা স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের বিরুদ্ধে বলে ধরা হয়েছে। সূত্র মারফত জানা গেছে, রউফ শুক্রবার আইসিসি শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। ম্যাচ চলাকালীন রউফ বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করতে এসেছিলেন। সেই সময় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ভারতীয় সমর্থকরা ‘কোহলি কোহলি’ স্লোগান দিচ্ছিলেন। যা ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এমসিজিতে বিরাট কোহলির মারা দুটি ছক্কাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল। তার জবাবে রউফ বিমান ভেঙে পড়ার অঙ্গভঙ্গি করছিলেন।
এই অঙ্গভঙ্গি অনেকেই ভারতের সামরিক অপারেশনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখেছে। মাঠে রউফ ভারতের তরুণ ওপেনার শুভমান গিল ও অভিষেক শর্মার দিকে কটাক্ষও করেছিলেন, যদিও দুই ব্যাটার নিজেদের ব্যাট দিয়ে জবাব দিয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের। শুনানিতে রউফ দাবি করেন, তার ‘৬-০’ অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে ভারতের কোনও সম্পর্ক নেই এবং এটি কোনও উস্কানিমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়নি। আইসিসি কর্মকর্তাদেরও তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, তাদের কাছে কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। আইসিসি কোড অফ কন্ডাক্ট অনুসারে, রউফ ও ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান দু’জনকেই লেভেল ১ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। রউফকে ৩০ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়েছে, আর ফারহানকে অর্ধশতরান করার পর বন্দুক দেখিয়ে সেলিব্রেশনের কারণে অফিসিয়াল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ফারহান শুনানিতে বলেছেন, তার উদযাপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল না। তিনি উল্লেখ করেন, প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনি ও বিরাট কোহলিও একই ধরনের অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করেছিলেন।
ফারহান এই উদযাপন করেছিলেন ভারত বনাম পাকিস্তান সুপার ফোর ম্যাচে অর্ধশতক পৌঁছানোর পর। ফারহান জানান, তিনি শুধু ব্যক্তিগতভাবে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এমএস ধোনি ও বিরাট কোহলির কথাও তুলে ধরেন, যাঁরা একই ধরনের বন্দুক–সদৃশ অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করেছিলেন মাঠে। ফারহান আরও বলেন, তিনি জাতে পাঠান হওয়ায় এই ধরনের ভঙ্গি তাঁদের সংস্কৃতির অংশ। যা প্রায়শই বিয়ের মতো আনন্দঘন মুহূর্তেও দেখা যায়। ফারহানের পাশাপাশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন হ্যারিস রউফও। গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়ার পর তিনি ‘৬-০’ ভঙ্গি এবং যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার অঙ্গভঙ্গি করেন। যা ভারতীয় দলের তরফে রাজনৈতিকভাবে উসকানিমূলক বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ভারতের পরবর্তী ‘অপারেশন সিঁদুরের’ পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে থাকায় এই ধরনের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে সমালোচনা আরও বাড়ে। এদিকে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে প্রথমবার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। টানা দু’ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে বসার পর সলমন আলি আঘার দল ১৩ বছরের ট্রফি খরা কাটাতে মরিয়া। ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত–পাকিস্তান।
