আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবশেষে হল বিশ্বজয়। সেই ২০০৫ থেকে শুরু। হার ২০১৭ ফাইনালেও। অবশেষে ২০২৫ সালে এসে স্বপ্নপূরণ। বিশ্বজয়ী হল হরমনপ্রীতের ভারতীয় মহিলা দল। বিশ্বকাপ জেতার পর মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’র সামনে ট্রফি নিয়ে ফোটোশ্যুট করেছেন হরমনপ্রীত কৌর। ফোটোশ্যুটের পাশাপাশি নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন ভারত অধিনায়ক।
হরমনপ্রীতের একটি ভিডিও দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি গাড়িতে চেপে কোথাও যাচ্ছেন তিনি। গাড়িতে বসেই হরমন বলেন, ‘আজ কোথায় যাচ্ছি? জীবনের কিছু বিশেষ মুহূর্ত উপভোগ করতে যাচ্ছি। এত দিন ধরে তার স্বপ্ন দেখেছি। জেতার পরে ট্রফি নিয়ে ফোটোশ্যুট করব। এত বছর ধরে এই স্বপ্নটা দেখেছি। আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হবে।’ 
তার পরেই দেখা যায়, গাড়ি থেকে নেমে ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’র সামনে ফোটোশ্যুট করছেন তিনি। ২০১১ সালে ঠিক এই জায়গায় ফোটোশ্যুট করেছিলেন ধোনি। ১৪ বছর পরে আবার এক বিশ্বজয়ী ভারতীয় অধিনায়ককে সেখানে দেখা গেল।
নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে হরমনপ্রীত বলেছেন, ‘যেদিন থেকে বোধ হয়েছে, সেদিন থেকে হাতে ব্যাট দেখেছি। মনে আছে, বাবার কিট ব্যাগ থেকে ব্যাট নিয়ে খেলতাম। সেটা অনেক বড় ছিল। বাবা কেটে ছোট করে দিয়েছিল। সেটা নিয়ে টেলিভিশনের সামনে বসে খেলা দেখতাম।’ মহিলাদের ক্রিকেট কী, সেটা তখনও জানতেন না হরমনপ্রীত। কিন্তু ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। অধিনায়ক বলেন, ‘তখন জানতামও না যে, মহিলাদের ক্রিকেট কেমন। কিন্তু নীল জার্সিটা পরার স্বপ্ন দেখতাম। তাই এটা আমার কাছে বিশেষ মুহূর্ত।’ এরপরই তিনি যোগ করেছেন, ‘সকলকে বলব, স্বপ্ন দেখা ছেড়ো না। কেউ জানে না, ভাগ্য কবে কাকে কোথায় নিয়ে যায়। কীভাবে হবে, কবে হবে, কেউ জানে না। কিন্তু স্বপ্ন দেখলে একদিন তা সত্যি হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রাখো। সাফল্য আসবেই।’
২০১৭ সালেও বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। সেবার অল্পের জন্য তা হাতছাড়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে মাত্র ৯ রানে হেরেছিলাম। ফাইনাল আমাদের হাতে ছিল। সেখান থেকে কীভাবে হেরেছিলাম এখনও জানি না। খুব কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু দেশে ফেরার পর যে সমর্থন পেয়েছিলাম তা অবাক করেছিল।’ সেই কারণেই এবার আর সুযোগ হারাতে চাননি হরমনপ্রীত। ভারত অধিনায়ক বলেছেন, ‘যেদিন থেকে ক্রিকেট দেখা আর খেলা শুরু করেছি, সেদিন থেকে স্বপ্ন দেখেছি বিশ্বকাপ জেতার। এবারের বিশ্বকাপের আগে বলেছিলাম, এবার আর সুযোগ হারাতে চাই না। মন থেকে বলেছিলাম। ঈশ্বর তা শুনেছেন।’
বিশ্বকাপ জিতে সমর্থকদের ধন্যবাদ দিয়েছিলেন হরমনপ্রীত। আরও একবার তিনি বলেছেন, ‘গোটা দেশ এই দিনটার অপেক্ষায় ছিল। সকলের আশীর্বাদে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমরা একাই মাঠে খেলিনি। গোটা দেশ আমাদের সঙ্গে খেলেছে। যাঁরা স্টেডিয়ামে ছিলেন, যাঁরা টেলিভিশনে খেলা দেখেছেন তাঁরাও আমাদের সঙ্গে খেলেছেন।’
বিশ্বকাপ জেতার পর রাতে বেশিক্ষণ ঘুম হয়নি হরমনপ্রীতের। হরমনপ্রীতের কথায়, ‘তিন–চার ঘণ্টা ঘুমিয়েও খুব তরতাজা লাগছে। এটা সাধারণত হয় না। আট–ন’ঘণ্টার ঘুম আমার দরকার। আসলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে অন্য কোনও কষ্টের অনুভূতি হচ্ছে না। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি।’ 
