আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারলে হয়তো এশিয়ান কাপে খেলার আশা ফুরিয়েই যেত। কিন্তু বঙ্গসন্তান রহিম আলির শেষ মুহূর্তের গোলে অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে ভারতীয় দল। সারা ম্যাচে ডিফেন্সিভ খেললেও শেষ মুহূর্তে সিঙ্গাপুরের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করেন রহিম। ভারতের সিনিয়র ফুটবল দলের হয়ে এটাই তাঁর প্রথম গোল। কিন্তু গোলের পরেও কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসেও আক্ষেপ শোনা গেল রহিমের মা সীমা বেগমের গলায়।
আজকাল ডট ইনকে তিনি ফোনে বললেন, ‘ইউটিউবে তো দেখায় না। টিভিতেও তো দেখতে পেলাম না। তাই ছেলের গোলটা দেখা হয়নি’। কিন্তু রহিমের গোলেই যে টিম ইন্ডিয়া হার বাঁচিয়েছে সে খবর পেয়েছেন আগেই। কথা বলতে বলতেই আনন্দ ঝরে পড়ছিল তাঁর গলায়। রহিমের খড়দার বাড়িতে গোটা পরিবার উচ্ছ্বসিত। তাঁর মা জানালেন, ‘সকালেই ফোনে কথা হয়েছে রহিমের সঙ্গে। খেলাটা টিভিতে দেখাবে না জানতাম। সকালে কথা বলার সময় আশীর্বাদ করেছি। বলে দিয়েছিলাম যেন মন দিয়ে খেলে, ভাল করে খেলে, টেনশন যেন একদম না করে’।
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে গোল করেছে, খুবই খুশির ব্যাপার, আনন্দের ব্যাপার। আমি তো সবসময় বলি তুমি শুধু সামনের দিকে তাকাবে, কেউ তোমার জায়গা নিতে পারবে না, ওর বাবাও বলে, আমিও বলি। সবসময় আমাদের আশীর্বাদ ওর সঙ্গে আছে’। এদিন ম্যাচের শেষ দিকে সুনীল ছেত্রীর পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন রহিম। হতাশ করেননি ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে। গোল করে মান রেখেছেন।
রহিমের পরিবার এখন রয়েছেন খড়দার বাড়িতেই। তাঁর দাদা আকবর আলি জানালেন, ভাই তো ফ্ল্যাটও কিনেছে। গাড়ি কিনেছে একটা, সাজিয়েছে বাড়িটা সুন্দর করে। তবে আমরা এখন খড়দাতেই আছি সবাই মিলে। সম্ভবত রহিম দেশে ফিরে দলের সঙ্গেই থাকবেন আপাতত। আগামী ১৪ তারিখ সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধেই ফিরতি লেগের ম্যাচ রয়েছে। এদিন গোল করার পর তিনি খালিদের বড় ভরসার জায়গা হয়ে উঠবেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে তাঁর মা অপেক্ষায় রয়েছেন ছেলের জন্য।
মাঝেমধ্যেই ব্যারাকপুরের কাছে মাজারে যান তিনি। জানালেন, ছেলে গোল করেছে। কাল মাজারে যাব। ওঁদের মাথার ওপর ছাদ নেই। রহিমকে বলব একটা ছাউনি করে দিতে’। মায়ের হাতের বিরিয়ানি রহিমের সবথেকে প্রিয়। বললেন, ‘ছেলে আমার হাতের খাবার খেতে ভালবাসে। আমার হাতের বিরিয়ানি খুব ভালবাসে। ছেলেকে এলে বলব, কী খাবে তুমি শুধু বলো’। সামনেই কালীপুজো আসছে। বাড়ির পাশের মাঠের পুজোতে প্রতিবার ঠাকুর দেয় রহিমের পরিবারই। বঙ্গ ফুটবলারের মা জানালেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশের মাঠেই কালীপুজো হয়, প্রত্যেকবার রহিম ঠাকুর দেয়। এবার গোল করেছে, এবারও বড় করে পুজো হবে। বড় ঠাকুর দেব’।
