পুলিশ-২ ইস্টবেঙ্গল-০
আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথায় বলে, বাঘে ছুঁলে আঠেরো ঘা। আর পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা। রবিবারের ইস্টবেঙ্গল-পুলিশ ম্যাচ দেখতে দেখতে বহু ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে যাওয়া এই শব্দবন্ধনীটাই মনে আসার কথা। লাল-হলুদের মতো দলকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করল পুলিশের অখ্যাত অনামী ছেলেরা। স্কোর লাইন বলছে, পুলিশ ২ ইস্টবেঙ্গল ০। ফলাফল যদি পুলিশের হয়ে আরও হৃষ্টপুষ্ট হত, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। ইস্টবেঙ্গলের এই হার যন্ত্রণাদায়ক তাদের সমর্থকদের কাছে। কারণ ১ আগস্ট গিয়েছে ক্লাবের জন্মদিন। সেই প্রতিষ্ঠাদিবসের রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতা লিগে হার মানলেন বিনো জর্জের ছেলেরা।
রবিবার নব্বই মিনিটের বেশি সময় ঘাম ঝরিয়েও পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। মরশুমে দ্বিতীয় হার হজম করল লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাব। মোহনবাগানকে আগে হারিয়েছিল পুলিশ।এবার ইস্টবেঙ্গলকেও হারাল তারা। অর্থাৎ একই লিগে দুই প্রধানকে হার মানাল পুলিশ। এদিন জেতার ফলে পয়েন্ট তালিকায় পুলিশ পৌঁছে গেল শীর্ষে। যদিও এখনও একাধিক ম্যাচ রয়েছে। অনেক উত্থান পতন রয়েছে।
এদিন দুই অর্ধে দুই গোল করে ম্যাচ জিতে নিল পুলিশ। পুলিশকে এগিয়ে দেন নইম। মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও গোল ছিল তাঁর। প্রথমার্ধে করা সেই গোল ধরে রাখে পুলিশ। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল করে ম্যাচ পকেটস্থ করে নেয় তারা। ৭৫ মিনিটে উজ্জ্বল হাওলাদারের সেন্টার থেকে গোল করে যান মৃন্ময় মহাপাত্র। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে তখন হাঙরের হাঁ।
আরও পড়ুন: কোহলি-রোহিত নেই, তাতে কী! সিরাজ একাই একশো, নাক উঁচু ইংরেজদের মন জিতে নিয়েছেন হায়দরাবাদি ...
পুলিশ আরও গোল করতেই পারত। লাল-হলুদ গোলকিপার আদিত্য একাধিকবার রক্ষাকর্তা হিসেবে অবতীর্ণ হন। ইস্টবেঙ্গলও গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। কিন্তু ঠোঁট ও পেয়ালার মধ্যে যে দূরত্ব থাকে চা পানের সময়ে, সেই ব্যবধান থেকেই গেল।
ইস্টবেঙ্গলকে এদিন একেবারেই ইস্টবেঙ্গল সুলভ দেখায়নি। কোথায় গেল লাল-হলুদের সেই ঝাঁজ, সেই ঔজ্জ্বল্য। তাঁদের ডিফেন্সে রক্তাল্পতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। পুলিশের ফুটবলাররা একাধিকবার লাল-হলুদের পেনাল্টি বক্সে কাঁপুনি ধরিয়েছেন। বোঝাপড়ার অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়দের মধ্যে। খেলার মধ্যে দেখা যায়নি জোশ। দেখা যায়নি ইচ্ছাশক্তি। ধারাবাহিকতারও অভাব দেখা গিয়েছে।
আবার লাল-হলুদ ফুটবলাররা যখন আক্রমণ শানিয়েছেন, তখন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে পুলিশের খেলোয়াড়রা পায়ের জঙ্গল বাড়িয়ে দেয় নিজেদের পেনাল্টি বক্সের সামনে। পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে হলে যে কৌশল, বুদ্ধিমত্তা এবং দক্ষতার প্রযোজন হত, তার ছিঁটেফোটাও দেখা যায়নি ডেভিডদের মধ্যে। উল্টে গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করলেও সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি বিনো জর্জের ছেলেরা। কখনও বড়লোকের বাউন্ডুলে ছেলের মতো উড়িয়ে দিয়েছেন শট, কখনও পুলিশের গোলকিপার বিষ শুষে নিয়েছেন। এই হারের রেশ যত তাড়াতাড়ি ইস্টবেঙ্গল কাটিয়ে উঠতে পারে, ততই মঙ্গল। বিনো জর্জ নিশ্চয় তাঁর ছেলেদের পেপ টক দেবেন। পরের ম্যাচের আগেই চাঙ্গা করে তুলবেন সায়ন-ডেভিডদের।
