ইস্টবেঙ্গল - ২ (সাহিল-আত্মঘাতী, ডেভিড)
মুম্বই সিটি - ৩ (ছাংতে, নিকোলাস-২)
সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: সুপার সাব হতে পারতেন ডেভিড। দু'গোলে পিছিয়ে পড়েও অদম্য লড়াই ম্যাচে ফেরায় লাল হলুদকে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। আবার হারের সরণিতে ইস্টবেঙ্গল। বছরের শুরুতেই হোঁচট। সোমবার ঘরের মাঠে মুম্বই সিটি এফসির কাছে ২-৩ গোলে হারল অস্কার ব্রুজোর দল। তিন ম্যাচ পর হার। বছর শেষে হায়দরাবাদের কাছে আটকে গিয়েছিল লাল হলুদ ব্রিগেড। এদিনও তথৈবচ। তবে পাঞ্জাব ম্যাচের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ ছিল। জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত লড়াইয়ে ২-২ করে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ওড়িশা ম্যাচের পর আবার হার। দুটো জয়, একটি ড্রয়ের পর মুখ থুবড়ে পড়ল লাল হলুদ। অস্কার দায়িত্ব নেওয়ার পর খেলায় অনেকটাই উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু গত দুই ম্যাচে গ্রাফ কিছুটা পড়তির দিকে।বছর শুরুতে ঘরের মাঠে ভাল ফুটবল খেলতে ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল। নিকোলাস, বিপিনরা সহজ সুযোগ মিস না করলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। ডার্বির আগে এই রেজাল্ট ফুটবলারদের মনোবলে অনেকটাই ধাক্কা দেবে। ১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়েই এগারো নম্বরেই থাকল অস্কার ব্রুজোর দল।
ক্লেইটন সিলভা, দিমিত্রিয়স ডিয়ামানটাকোসকে সামনে রেখে ৪-৪-২ ফরমেশন শুরু করেন অস্কার। বাঁ প্রান্ত সচল রাখলেও, নিপুণতার অভাব পিভি বিষ্ণুর। ইস্টবেঙ্গলের প্রথম হাফ চান্স ২০ মিনিটে। মুম্বইয়ের তিনজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পরেন বিষ্ণু। কিন্তু ফাইনাল পাস বিপক্ষের পায়ে জমা পড়ে। প্রথমার্ধে লাল হলুদের আরও একটা গোলের সুযোগ তৈরি হয় বিষ্ণুর পা থেকেই। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। মুম্বইয়ের প্রথম পজিটিভ সুযোগ ২৮ মিনিটে। ভ্যান নিয়েফের কর্নার থেকে নিকোলাস কারেলিসের শট পোস্টে লাগে। রক্ষণের ভুলে ৩৯ মিনিট প্রথম গোল হজম ইস্টবেঙ্গলের। বিক্রম প্রতাপের পাস থেকে ব্রেন্ডন ফার্নান্দেজের থ্রু ধরে ছাংতের শট পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায়। প্রথম গোলের ক্ষেত্রে দায়ী চুংনুঙ্গা এবং প্রভার লাকরা। বিরতির আগেই দ্বিতীয় গোল হজম।
ম্যাচের ৪৪ মিনিটে ০-২। ভ্যান নিয়েফের পাস থেকে ইউস্তেকে কাটিয়ে গোলে শট নেন নিকোলাস। শট তালুবন্দি করতে পারেনি প্রভসুখন। ইস্টবেঙ্গল কিপারের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়া বল ফিরতি শটে গোল ঠেলেন নিকোলাস। বিরতির আগেই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় গ্রিসের স্ট্রাইকার। কিন্তু সংযুক্তি সময় তাঁর শট বাইরে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তেড়েফুঁড়ে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। মনে করায় পাঞ্জাব ম্যাচকে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম কোয়ার্টারে জোড়া সুযোগ পায় ইস্টবেঙ্গল। ইউস্তের ক্রস থেকে ডিয়ামানটাকোসের হেড বাইরে যায়। এদিন তেমন কার্যকরী দেখায়নি লাল হলুদের গ্রিক স্ট্রাইকারকে। সুযোগ এসেছিল জিকসনের সামনেও। কিন্তু তাঁর শট ক্রসপিসের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে সাহিল পানওয়ারের আত্মঘাতী গোল ব্যবধান কমে। গোল পাওয়ার পর মুম্বইকে চেপে ধরে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ২-২। ক্লেইটনের কর্নার থেকে হেড করে বল নামিয়ে দেন ইউস্তে। বাঁ পায়ের শটে বল জালে রাখেন পরিবর্ত ফুটবলার ডেভিড। তখনও নির্ধারিত সময়ের ৭ মিনিট বাকি। সমতা ফেরার পর চাঙ্গা যুবভারতীর গ্যালারি। কিন্তু মাত্র চার মিনিটেই যাবতীয় আশায় জলাঞ্জলি। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে জয়সূচক গোল নিকোলাসের। নাথান রডরিগেজ ফরোয়ার্ড থ্রু বাড়ানোর সময় ধরাশায়ী হন আনোয়ার। হিজাজিকে কাটিয়ে নিখুঁত প্লেসিং নিকোলাসের। হারের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলের বড় দুশ্চিন্তা আনোয়ারের চোট। ম্যাচের শেষদিকে আর পারছিলেন না। খোড়াতে খোয়াতে মাঠ ছাড়েন।
