ইস্টবেঙ্গল - ২ (ডেভিড, শ্যামল)

ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব - ১ (অমিত)

সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর ইস্টবেঙ্গল মাঠ লোকে লোকারণ্য। গ্যালারিতে জ্বলল মশাল। একের পর এক বাজি। দুর্গাপুজার আগেই যেন আগাম দীপাবলি ইস্টবেঙ্গলে। শুরু উৎসব। দেবীপক্ষের শুরুতেই ট্রফি ঢুকল লাল হলুদ তাঁবুতে। এক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল। সাত গোলে জেতার ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় ইস্টবেঙ্গলের। একদিনে জোড়া ট্রফি। পরপর দু'বার চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল। আগের মরশুমের ট্রফি পাওয়ার দিনই আরও একবার কলকাতা লিগ জয় লাল হলুদের। ইউনাইটেড কলকাতা ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে ঘরের মাঠে সমর্থকদের উপস্থিতিতে ৪১তম ঘরোয়া লিগ জিতল বিনো জর্জের দল। ময়দানে প্রিয় দলের জয় দেখতে মাঠ ভরায় সমর্থকরা। সপ্তাহের প্রথম দিন হলেও হাজার দশেক সাপোর্টার হাজির ছিল। চ্যাম্পিয়ন হওয়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা ছিল। ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাব এবং ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে জয়ের পর এদিন মাত্র এক পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল ইস্টবেঙ্গলের। দুই ম্যাচে কলকাতার প্রধানের পয়েন্ট ছিল ৬। সেখানে ইউনাইটেডের পয়েন্ট ছিল ৪। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তাঁদের প্রয়োজন ছিল জয়। কিন্তু বিপক্ষের মাঠে প্রথমার্ধে পুরোপুরি কোণঠাসা। প্রথম ৪৫ মিনিটেই শেষ হয়ে যেতে পারত ম্যাচ। প্রায় হাফ ডজন গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। হ্যাটট্রিক মিস করেন পিভি বিষ্ণু এবং সায়ন ব্যানার্জি। 

ঘরের মাঠে দাপুটে শুরু লাল হলুদের। একাই তিন থেকে চার গোল মিস বিষ্ণুর। তিন মিনিটের মাথায় সাইড নেটে মারেন বিষ্ণু। তার দু'মিনিটের মধ্যে আবার সুযোগ। আমনের শট গোল লাইন থেকে ফেরত পাঠান সুখচাঁদ কিস্কু। এক মিনিটের মধ্যে আবার গোলের সুযোগ নষ্ট। নাসিবের হেড থেকে বিষ্ণুর মাইনাস। আমনের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধে পুরোপুরি একপেশে ফুটবল। কোনওরকম প্রতিরোধ গড়তে পারেনি ইউনাইটেড। বিরতির আগেই ৫-০ হতে পারত স্কোরলাইন। প্রথম কোয়ার্টারের শেষে সায়নের পাস থেকে বিষ্ণুর সাইড ভলিতে গোল মিস। তার এক মিনিটের মধ্যে আমনের সিটার নষ্ট। মুহুর্মুহু সুযোগ নষ্টে ম্যাচটাকে কঠিন করে ফেলে ইস্টবেঙ্গল। সায়ন, বিষ্ণুর যুগলবন্দিতে প্রথমার্ধেই খেলা শেষ হয়ে যেতে পারত। হ্যাটট্রিক মিস দুই তরুণ ফুটবলারের। 

ম্যাচের ২০ মিনিটে বিষ্ণুর শট বাঁচায় ইউনাইটেডের গোলকিপার রওনক। তার ১২ মিনিটের মধ্যে সায়নের মাইনাস থেকে বিষ্ণুর শট পোস্টের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম গোল। সায়নের শট বাঁচায় ইউনাইটেডের গোলকিপার। ফিরতি বলে ডেভিডের জোরালো শটে গোল। ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। বিরতির ঠিক আগে সায়নের শট পোস্টে লাগে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল মিস ইস্টবেঙ্গলের। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে ইউনাইটেড। বিরতির পর কিছুটা ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে তাঁরা। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে শ্রীনাথের শট বাঁচায় ইস্টবেঙ্গল কিপার গৌরব। তার কিছুক্ষণ পরই ভিকি থাপাকে বক্সের মধ্যে ফাউল করে বিক্রম প্রধান। পেনাল্টির দাবি করে ইউনাইটেডের ফুটবলাররা। কিন্তু রেফারি পেনাল্টি দেয়নি। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে ১-১। ডানদিক থেকে শ্রীনাথের ক্রস। হেডে গোল অমিত বসাকের। কিন্তু বিনোর কপালে ভাঁজ পড়ার আগেই তাঁকে চিন্তামুক্ত করে ফুটবলাররা।‌ এক মিনিটের মধ্যে আবার এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে গুইতের শট বাঁচায় ইউনাইটেডের কিপার। ফিরতি শটে গোল পরিবর্ত ফুটবলার শ্যামল বেসরার।