আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাঙা কাঁধ নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ওভালে ইতিহাস রচনা করেন ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ড জিততে না পারলেও, মন জয় করে নেন তারকা পেসার। তাঁকে কুর্নিশ জানায় ভারতীয়রা। চলতি সিরিজে ভাঙা পায়ের পাতা নিয়ে ব্যাট করেন ঋষভ পন্থ। এর আগে অনিল কুম্বলে ভাঙা পাঁজর নিয়ে বল করেন। এদের তালিকায় নতুন সংযোজন ক্রিস ওকস। শেষ টেস্টের পঞ্চম দিন ইংল্যান্ড ৯ উইকেট হারানোর পর বাঁ হাত স্লিংয়ে ঝুলিয়ে ওভালের সিঁড়ি দিয়ে নেমে মাঠে প্রবেশ করেন ওকস। যা দেখে অবাক হয়ে যায় ধারাভাষ্যকাররা। বাঁ কাঁধের হাড় সরে গিয়েছে। কোনওভাবেই ব্যাট করতে পারবেন না। তাসত্ত্বেও সাহস দেখান। যা বহু বছর মনে রাখবে ক্রিকেট ভক্তরা। এক বলের মুখোমুখি না হতে হলেও, যন্ত্রণা নিয়ে রান নেন। ওভাল টেস্টের দু'দিন পর এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ইংল্যান্ডের তারকা।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ওকস জানান, তিনি বরাবরই জানতেন যে প্রয়োজন পড়লে ব্যাট করতে নামবেন তিনি। তবে ইংল্যান্ডের ৬ রানে হার এখনও মেনে নিতে পারেননি। ওকস বলেন, 'আমি এখনও চূড়ান্ত হতাশ। মানতে পারছি না আমরা এই জায়গা থেকে জিততে পারিনি। আমি কখনও ভাবিনি আমি নামব না। যদি জয়ের জন্য ১০০ রান বাকি থাকত, তাহলেও নামতাম। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে স্বাগত জানিয়েছে। যা পেয়ে ভাল লাগছে। কয়েকজন ভারতীয় প্লেয়ার আমার সঙ্গে এসে কথা বলে, সম্মান জানায়। তবে আমার জায়গায় অন্য কোনও প্লেয়ার থাকলেও এটাই করত। নয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ম্যাচ শেষ ঘোষণা করা যায় না।' 

কোনও বলের মুখোমুখি না হতে হলেও আটকিনসনের সঙ্গে রান নেওয়া সহজ ছিল না। সিঙ্গলস নেওয়ার সময়ও যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন ইংলিশ তারকা। সেদিনের সেই মুহূর্ত ভাগ করে নিলেন। ওকস বলেন, 'প্রথম রানটা কঠিন ছিল। আমি শুধু কোডিন নিয়েছিলাম। প্রচণ্ড ব্যথা ছিল। কিন্তু মাঠে নামার পর আর কিছু মাথায় ছিল না। হাত স্লিংয়ে ঝোলানো থাকা সত্ত্বেও আমি তান নেওয়ার চেষ্টা করি। মনে হয়েছিল, কাঁধের হাড় বোধহয় আবার সরে গেল। তাই আমি হেলমেট ছুড়ে ফেলে, দাঁত দিয়ে গ্ল্যাভস খুলে দেখি কাঁধ ঠিক আছে কিনা।' ম্যাচ শেষে ওকসের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন শুভমন গিল। একাধিক ভারতীয় প্লেয়ার তাঁকে কুর্নিশ জানায়। প্রসঙ্গত, চতুর্থ দিনের শেষে জো রুট জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে ব্যাট করতে নামবেন ওকস। বাঁ হাতেও ব্যাট করতে রাজি ছিলেন তিনি। যেমন কথা, তেমন কাজ। তবে নামলেও কোনও ভারতীয় বোলারের মুখোমুখি হতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা না হওয়ায় আফশোস রয়ে গিয়েছে। ওভালের ট্র্যাজিক নায়ক হয়েই থেকে গেলেন ওকস।