আজকাল ওয়েবডেস্ক: জোসে মরিনহোকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ম্যানেজার হিসেবে ঘোষণা করল পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকা। দুই দশকেরও বেশি সময় পরে ফের নিজের দেশেই ফিরে এলেন ‘স্পেশাল ওয়ান’। বৃহস্পতিবার লিসবনের সিসালে অবস্থিত বেনফিকার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ক্লাব সভাপতি রুই কোস্তা তাঁর ম্যানেজারের পদে যোগ দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। মোরিনহো চুক্তি করেছেন ২০২৭ সালের সামার পর্যন্ত। ৬২ বছর বয়সি মরিনহো তাঁর ম্যানেজারিয়াল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বেনফিকাতেই, ২০০০ সালে। তবে মাত্র তিন মাস পর চুক্তি সংক্রান্ত সমস্যার জেরে সেই অধ্যায়ের দ্রুত ইতি ঘটে। এর পরের দুই দশকে তিনি তৈরি করেন বিশ্বব্যাপী সাফল্যের ইতিহাস।

পোর্তোর হয়ে ২০০৪ সালে জেতেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তারপর চেলসি, ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এদিকে, সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পর বেনফিকা ফের মোরিনহোর দ্বারস্থ হয়। ব্রুনো লাজের বিদায় আসে অপ্রত্যাশিতভাবে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কারাবাখের কাছে হেরে। বর্তমানে প্রিমেইরা লিগায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে বেনফিকা, শীর্ষে থাকা পোর্তোর থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে। প্রেস কনফারেন্সে মোরিনহো বলেন, ‘আমার প্রতিশ্রুতি একটাই—আমি বেনফিকার জন্য বাঁচব, আমার মিশনের জন্য বাঁচব। আমি গুরুত্বপূর্ণ নই, গুরুত্বপূর্ণ হল বেনফিকা আর এই ক্লাবের সমর্থকেরা। আমি এখানে সেবার জন্য এসেছি।’ গত মাসেই ফেনেরবাচে ছাড়ার পর (যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্লে-অফে নতুন দল বেনফিকার কাছেই হেরেছিলেন) দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন বেনফিকা সামলানোর।

মোরিনহোর ভাষায়, ‘আমি কখনওই খালি বসে থাকতে চাই না। আমি ওয়ার্কাহোলিক, তবে ভুল ক্লাবকে হ্যাঁ বলতেও চাই না। বেনফিকা সামলানোর সুযোগ পেয়েই আমি দ্বিতীয়বার ভাবিনি।’ ব্রুনো লাজের জায়গায় এসে মোরিনহো আবারও সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রতিযোগিতায় নামছেন, যা তিনি দু’বার জিতেছেন—সর্বশেষ ২০১০ সালে ইন্টার মিলানের সঙ্গে। এবার তাঁর প্রথম ম্যাচে বেনফিকা নামবে সতেরো নম্বরে থাকা এভিএসের মাঠে। দুই দশক আগে অসমাপ্ত অধ্যায় এবার নতুন করে শুরু করতে চলেছেন মরিনহো, নিজের দেশেই, প্রিয় ক্লাব বেনফিকার ডাগআউটে বসে। অন্যদিকে, দাপটের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান শুরু করল গতবারের চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। ঘরের মাঠে আটালান্টাকে ৪–০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে লুইস এনরিকের ছেলেরা। অন্যদিকে দিনের সবথেকে আকর্ষণীয় ম্যাচে ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ী চেলসিকে হারাল বায়ার্ন মিউনিখ।

বুধবার রাতে ফ্রান্সের পার্ক দে প্রিন্সেসে ইতালির ক্লাব আটালান্টাকে ৪–০ গোলে হারাল প্যারিস সাঁ জাঁ। ম্যাচের ৩ মিনিটেই প্রথম গোল করেন অধিনায়ক মারকুয়েজ। এর পর নিয়মিত ব্যবধানে গোল করতে থাকে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ৩১ মিনিটে খভিচা খভারাতসখেলিয়া দ্বিতীয় গোলটি করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় পিএসজি। ৫১ তম মিনিটে বারকোলার পাস থেকে নুনো মেন্ডেজ চমৎকার ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন করেন ৩–০। ইনজুরি টাইমে আটালান্টার ডিফেন্ডারের ভুলে পাওয়া বল থেকে গনসালো রামোস সহজ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চতুর্থ গোলটি করেন।

এদিকে, হেভিওয়েটদের লড়াইয়ে চেলসিকে ৩–১ গোলে হারায় বায়ার্ন। আলিয়াঞ্জ অ্যারিনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে আত্মঘাতী গোল করে বসেন চেলসি ডিফেন্ডার ট্রেভর চালোবা। মিনিট সাতেক বাদে আবার বায়ার্ন পেনাল্টি পেয়ে যায়। এবার বক্সে হ্যারি কেনকে ফাউল করেন কাইসেডো। স্পট থেকে গোল করতে ভুল করেননি কেন। এরপর অবশ্য পাল্টা আঘাত হানে চেলসিও। ২৯ মিনিটে কোল পালমারের গোলে ব্যবধান কমায় লন্ডনের ক্লাবটি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চেলসিকে আর প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেয়নি বায়ার্ন। একের পর এক আক্রমণে তাঁরা বিদ্ধ করেন চেলসিকে। ৬৩ মিনিটে ফের গোল পান কেন। এই গোলের ফলে নয়া রেকর্ডের মালিক হন কেন। রোনাল্ডো এবং নেইমারের পর তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুটি ক্লাবের হয়ে ২০ টির বেশি গোল করলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক।