আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্রিসবেন টেস্টের পর নয় দিনের বিরতি ছিল। ইংল্যান্ড তখন অ্যাশেজে ০–২ পিছিয়ে। এই অবস্থায় ক্রিকেটারদের তরতাজা রাখতে ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম স্টোকসদের ছুটি দিয়েছিলেন। আর সেই ছুটি কাটাতে গিয়ে আকণ্ঠ মদ্যপান করেছিলেন হ্যারি ব্রুকরা। এরপর অ্যাডিলেডে হেরে অ্যাশেজ খোয়াতে হয়েছে ইংরেজদের। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। প্রাক্তন ক্রিকেটাররা রীতিমতো সমালোচনা শুরু করেছেন স্টোকসদের। এই পরিস্থিতিতে সতীর্থদের পাশেই দাঁড়ালেন স্টোকস।
অভিযোগ, ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্টে হারের পর নুসা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়ে অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিলেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা।
অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ড বক্সিং ডে টেস্টের আগে বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। স্টোকসের কথায় ‘গোটা বিষয়টা আমি কীভাবে সামলাচ্ছি, সেটাই এই মুহূর্তে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হিসাবে আমি সকলের ভাল চাই। বিশেষ করে নির্দিষ্ট কয়েক জনের ভাল চাই।’ এরপরই স্টোকস যোগ করেন, ‘এটুকু বুঝি এই ধরনের বিষয়গুলো মানুষকে কীভাবে প্রভাবিত করে। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হিসাবে আমার দায়িত্ব যতটা সম্ভব সতীর্থদের পাশে থাকা।’
স্টোকসের কথা থেকে এটা অন্তত স্পষ্ট যে, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন নয়। যদিও স্টোকস বলেছেন, সিরিজ হাতছাড়া হলেও শেষ দু’টি টেস্টে তাঁরা নিজেদের সেরাটাই দেবেন। তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে ক্রিকেটারদের পাশে থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার সেরা উপায় হল মাঠে নেমে সেরাটা দিতে হবে এবং বাকি দু’টি টেস্ট জিততে হবে। এটাই আমাদের প্রধান কাজ। আমি ক্রিকেটারদের পাশে আছি। এটা ওদের উপলব্ধি করানোই এখন প্রধান কাজ। দেশের জন্য ওরা যাতে সেরা পারফরম্যান্স করতে পারে, আমি ওদের সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি।’
ইংল্যান্ড শিবিরের আপাতত লক্ষ্য অ্যাশেজ হাতছাড়া হলেও সম্মান বাঁচিয়ে দেশে ফেরা। আর তার জন্য শেষ দুই টেস্ট জিততে হবে। অস্ট্রেলিয়া আবার হোয়াইটওয়াশের টার্গেট নিয়েছে। তবে স্টোকস মেনে নিয়েছেন সিরিজের ফলাফলের উপরই তাঁদের মূল্যায়ন নির্ভর করবে। ইংরেজ অধিনায়কের কথায়, ‘০–৩ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলে বা সিরিজ হেরে গেলে, আপনি যাই বলবেন বা করবেন সব কিছুই খতিয়ে দেখা হবে। এই পরিস্থিতিতে আসলে নিজেদের পক্ষে কোনও যুক্তিই খাটে না।’
অতিরিক্ত মদ্যপানের অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো বিরক্ত ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে দলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রব কি’কে। রব বলেছেন, ‘অনেকেই অভিযোগ করছে, নুসায় দলের ক্রিকেটাররা অতিরিক্ত মদ্যপান করেছে। যদি সেটা হয় তো অন্যায় হয়েছে। একটা জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কখনওই সিরিজের মাঝে অতিরিক্ত মদ্যপান করতে পারে না। তবে এখনও সে রকম কোনও খবর আমি পাইনি।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘আমি নিজে কোনও দিন মদ্যপান করিনি। মদ্যপান করলে চাপ কমে না। যারা এসব বলে, তারা নিজেদের মতো করে যুক্তি খাড়া করে। উল্টে সিরিজের মাঝে অতিরিক্ত মদ্যপান করলে খেলায় মনঃসংযোগে সমস্যা হয়। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে রেয়াত করা হবে না।’
প্রসঙ্গত, ২৬ ডিসেম্বর থেকে মেলবোর্নে শুরু হবে বক্সিং ডে টেস্ট। আর অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট ৪ জানুয়ারি থেকে সিডনিতে।
