আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমানে ভারতীয় ফুটবলের টালমাটাল অবস্থা। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আইএসএল হওয়া নিয়ে একটি আশার আলো দেখা দিয়েছে। ডিসেম্বর বা জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে আইএসএল। তবে তার আগে নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে। সম্পূর্ণ করতে হবে নির্বাচনও। ভারতীয় ফুটবলের এই অবস্থার জন্য বাইচুং ভুটিয়া দুষলেন ফিফাকে। কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে টাটা স্টিল ম্যারাথনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে দাবি করেন, ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার আগেই হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। তাহলে ভারতীয় ফুটবল এই জায়গায় পৌঁছত না। বাইচুং বলেন, 'আমি যা বলেছিলাম, ফিফা চিঠিতে সেটাই লিখেছে। ফিফার তিন বছর আগে এই চিঠি দেওয়া উচিত ছিল। তিন বছর আগেও সংবিধান ছিল না। তখন কেন লেখা হয়নি? তিন বছর আগেই চিঠি দিলে ভারতীয় ফুটবলের এত খারাপ অবস্থা হত না। এবার সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত জানাবে। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। আশা করছি একটা পথ বেরোবে। আইএসএল হবে।'
এই অবস্থার জন্য আরও একবার ফেডারেশনের কর্তাদের দায়ী করলেন পাহাড়ি বিছে। তুলে ধরেন আই লিগের উদাহরণ। বাইচুং বলেন, 'আইএসএল ছেড়ে দাও, আই লিগে কে চ্যাম্পিয়ন আজকেও জানতে পারিনি। অবনমন নিয়েও কোনও খবর নেই। গ্রাসরুট টুর্নামেন্টও হয়নি। আশা করছি পরিস্থিতি ভাল হবে। সংবিধান তৈরি হবে। নির্বাচনও হবে। যেই আশুক, শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।' তিন বছর আগে নির্বাচনে দাঁড়ান। কিন্তু এবার কোনও ইচ্ছে নেই। নির্বাচন প্রসঙ্গে বাইচুং বলেন, 'নির্বাচনের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আশা করব ভাল কেউ আসবে, এবং ফেডারেশনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।'
ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দলের পারফরম্যান্সে খুশি। তবে পাশাপাশি সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন। বরং, নওসাদ মুসার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের প্রশংসা করেন। বাইচুং বলেন, 'খালিদ ব্রোঞ্জ জিতেছে। ভারতের জন্য ভাল রেজাল্ট। তবে খালিদ আইএসএলে থাকার সময় থেকে একটা ভয় ছিল। আদৌ কোন দলটা পাবে জানি না। প্রথমে একটা ভাল দলকে হারাবে, তারপর ৫-০ গোলে হারবে। ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। রেজাল্ট এবং পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা আনতে হবে। নওসাদ মুসার অধীনে অনূর্ধ্ব-২৩ দল অনেক ভাল পারফরমেন্স দিয়েছে। এদের সিনিয়র দলে আনা উচিত। বিশেষ করে ফরোয়ার্ড লাইনকে। কাফা টুর্নামেন্টে তিনটেই ডিফেন্ডারের গোল। থ্রো, কর্নার কিক থেকে হয়েছিল। সবসময় সেট পিসের ভরসায় থাকা যায় না। আমাদের আসল ফোকাস এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ হওয়া উচিত। যার জন্য ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।' আগে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারদের নিয়ে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ দল ছিল। কিন্তু খুব বেশি কার্যকরী হয়নি। তাই জুনিয়র ফুটবলারদের নিয়ে একটি দল বানানোর পক্ষপাতী নয় বাইচুং। জানান, এইভাবে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে না। কারণ আগে অনূর্ধ্ব-২৩ দলে মূলত ইন্ডিয়ান অ্যারোজের ফুটবলাররা সুযোগ পেত। কিন্তু বর্তমানে সেটা করলে চলবে না। অনেক ভাল ফুটবলার রয়েছে। ছয় মাসের সময়ে নিজেকে আমূলভাবে বদলে ফেলতে পারে একজন ফুটবলার। সুতরাং ভারতীয় দলে তাঁদের জন্য দরজা খোলা রাখা উচিত। বাইচুং মনে করেন, সিনিয়র জাতীয় দলে একজন অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলার খেলানো বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়।
বৃহস্পতিবার নেপালের পরিস্থিতি নিয়েও মুখ খোলেন ভারতীয় তারকা। প্রতিবেশী দেশে পরিবারের লোকজন, বন্ধুবান্ধব রয়েছে। আশা করছেন, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। বাইচুং বলেন, 'নেপালের পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি শিলিগুড়ি এবং সিকিমে থাকি। শিলিগুড়ি এমন একটা জায়গা যেখান থেকে বাংলাদেশ এবং নেপাল খুবই কাছে। এই ঘটনা বাংলা এবং ভারতীয় নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আশা করব এবার নেপালে সক্রিয় নেতারা আসবে। জেন জি দেখিয়ে দিয়েছে ওদেরও সরকার বদলানোর ক্ষমতা আছে। এবার যা হবে সেটা নেপালের ভালর জন্যই হবে। ওখানে আমার পরিবারের লোকজন, বন্ধু বান্ধব রয়েছে। বর্তমানে সবাই সুস্থ আছে। আশা করছি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।'
