আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়। এই জন্যই বোধহয় বলা হয়, প্রত্যেক মায়ের মধ্যেই বাস করেন জগৎ জননী দুর্গা! একদিকে সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন, কোনও কসুর করছেন না মায়ের দায়িত্ব পালনে। পরক্ষণেই তিনি আবার অবতীর্ণ হচ্ছেন বিশ্বমানের ক্রীড়াবিদ রূপে। মাতৃত্বের ভার সামলে ১০০ কিলোমিটারের আল্ট্রা ম্যারাথন জয় করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন কানাডার দৌড়বিদ স্টেফানি কেস।

রূপকথার মতো শোনালেও তা বাস্তবেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন কানাডার মানবাধিকার আইনজীবী ও আল্ট্রা-ম্যারাথন দৌড়বিদ স্টেফানি কেস। ‘আল্ট্রা ট্রেইল স্নোদনিয়া ১০০কে’ নামের প্রতিযোগিতায় ৬ মাসের কন্যা সন্তানকে তিন দফায় স্তন্যপান করিয়েও নারী বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তিনি। ৪২ বছর বয়সি স্টেফানি প্রতিযোগিতাটি শেষ করেন ১৬ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটে।

স্টেফানির এই অভাবনীয় কৃতিত্ব সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বের ক্রীড়া জগতে। প্রসবের পর মানসিক ও শারীরিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও হার মানেননি স্টেফানি। ক্রীড়াপ্রেমীদের মত, কেবল শারীরিক সক্ষমতা নয়, মাতৃত্বেরও এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন তিনি। স্টেফানির নিজের কথায়, “মা হওয়া মানেই কেরিয়ারে ইতি টানা নয়। আমি চাই, মায়েরা বুঝুক, তাদের জীবনের কোনও অধ্যায়ই কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়। বরং প্রতিটা অধ্যায় এক নতুন শক্তির উৎস।”

প্রসঙ্গত, স্টেফানির ব্যক্তিগত জীবনে কিন্তু কম প্রতিবন্ধকতা আসেনি। সন্তান ধারণে মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হন তিনি। গর্ভপাত হয়, একাধিকার ব্যর্থ হয় আইভিএফ পদ্ধতিও। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। অবশেষে বহু প্রচেষ্টার পরে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। স্বাস্থ্যসচেতন স্টেফানি এই দৌড়ের জন্য শরীর তৈরি করতে এবং নিয়মিত স্তন্য উৎপাদন ধরে রাখতে বিশেষ খাদ্যাভ্যাস অবলম্বন করেন। আছে নিজস্ব ফিটনেস রুটিনও। দৌড়বিদ জানিয়েছেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য আরও বড়। হার্ডরক ১০০ নামের ১০২ মাইলের একটি ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিতে আমেরিকায় যেতে চান তিনি।