আমাদের চারপাশে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। ঠিক যেমন কয়েকদিন আগে একটি ঘটনা ঘিরে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে। ১১ বছর আগে মৃত স্বামীর সন্তান গর্ভে ধারণ করেছেন, এমনই দাবি করেছেন এক মহিলা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। মহিলার সেই বিস্ময়কর দাবি সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই কৌতূহলের শেষ নেই। 

ওই মহিলার বক্তব্য ছিল, তাঁর স্বামী ১১ বছর আগে মারা গিয়েছেন। কিন্তু বিগত দিনে প্রায়ই তিনি স্বপ্নে আসেন। স্বপ্নে নাকি তাঁরা একসঙ্গে খাওয়া, গল্প থেকে শুরু করে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটাতেন! তখনই মহিলা গর্ভবতী হন। মৃত স্বামী তাঁর গর্ভে একটি সন্তান ‘উপহার’ দিয়ে গিয়েছেন। তিনি সেই সন্তানেরই জন্ম দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মহিলা। 

আরও পড়ুনঃ স্বপ্নে তাঁকে ধর্ষন করতে দেখেছিলেন মহিলা, সেই অভিযোগেই ২৮ বছরের কারাবাস! ৬০ বছর বয়সে এসে বেকসুর খালাস

স্বামীর মৃত্যুর পর ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে একাই থাকছিলেন এবং অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেননি বলে জোর গলায় দাবি করেছেন। কয়েক মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় জানা যায়, তিনি গর্ভবতী। মহিলার বিশ্বাস, মৃত স্বামীই স্বপ্নের মাধ্যমে তাঁকে সন্তান দিয়েছেন। 

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় মানুষ থেকে নেটাগরিকদের মনে আলোড়ন উঠেছে প্রবল। মহিলার বক্তব্যে হইচই পড়ে যায় স্থানীয় মহলে। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘অলৌকিক ঘটনা’ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকেই পুরো ব্যাপারটিকে অবিশ্বাস্য বলে মনে করছেন। অনেকে ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছেন। সমাজ মাধ্যমে এক পক্ষের মত, বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অবশ্যই ডিএনএ পরীক্ষা করা উচিত।

আরও পড়ুনঃ রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

ঘটনাটির প্রসঙ্গে বিজ্ঞান কী বলে? চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, গর্ভধারণের জন্য নারীর ডিম্বাণুর সঙ্গে পুরুষের শুক্রাণুর মিলন অপরিহার্য। এটি সাধারণত শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ঘটে, অথবা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ)-এর মতো চিকিৎসা পদ্ধতিতে সম্ভব হয়। কেবল স্বপ্ন বা আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গর্ভধারণের কোনও প্রমাণিত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

স্বামীর মৃত্যুর আগে তাঁর শুক্রাণু সংরক্ষণ করা এবং পরে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দেওয়ার নজির রয়েছে। ২০২৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লরা অরিকো নামে এক মহিলা ১০ বছর আগে মারা যাওয়া স্বামীর সংরক্ষিত শুক্রাণু দিয়ে গর্ভবতী হন। ভারতের কেরালায় এক মহিলাও মৃত স্বামীর সংরক্ষিত শুক্রাণু দিয়ে যমজ সন্তানের জন্ম দেন। ব্রিটেনে এক মহিলা স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর আইভিএফ-এর মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই গর্ভধারণ হয়েছিল কেবল তখনই, যখন মৃত স্বামীর শুক্রাণু আগে থেকেই সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু এই ঘটনার ক্ষেত্রে সেই ধরনের কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। ফলে বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে এবং অনেকে এটিকে নিছক কল্পনা বা মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বলেই মনে করছেন।