আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাস্তব যে কখনও কখনও কল্পনাকেও হার মানায়, তার প্রমাণ মিলল উত্তরপ্রদেশে। ইনস্টাগ্রামে মাত্র দু’জন ফলোয়ার কমে যাওয়ায় স্বামীর বিরুদ্ধে সোজা থানায় হাজির হলেন স্ত্রী! তাঁর অভিযোগ, স্বামীর জন্যই তিনি ‘রিল’ বানানোর সময় পাচ্ছেন না, আর সে কারণেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা কমছে। এই অদ্ভুত দাম্পত্য কলহ নিয়ে ফাঁপরে পড়েছে পুলিশও।

একটি হিন্দি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের হাপুরের বাসিন্দা নিশা বর্তমানে নয়ডাতে থাকেন স্বামী বিজেন্দ্রর সঙ্গে। সম্প্রতি তিনি হাপুরের মহিলা থানায় এসে অভিযোগ করেন যে তাঁর ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের সংখ্যা দু’জন কমে গিয়েছে। এর জন্য তিনি সরাসরি স্বামীকেই দায়ী করেন। নিশার দাবি, স্বামী তাঁকে দিয়ে সংসারের প্রচুর কাজ করাচ্ছেন, যার ফলে তিনি ইনস্টাগ্রামে আগের মতো সময় দিতে পারছেন না। এই কারণেই তাঁর ফলোয়ার কমেছে এবং এই বিষয়টি তাঁকে এতটাই ব্যথিত করেছে যে তিনি স্বামীর ঘর ছেড়ে নিজের বাপের বাড়ি চলে এসেছেন।

জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দম্পতির মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই মতবিরোধ চলছিল। বিজেন্দ্র চাইতেন, নিশা সামাজিক মাধ্যমে সময় কিছুটা কম দিয়ে সংসারের দায়িত্বের দিকে বেশি মনোযোগ দিন।
নিশা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, স্বামীর কথা মতো চলতে গিয়ে তিনি দিনে দু’টি করে রিল পোস্ট করতে পারছিলেন না। এর সমাজমাধ্যমে নিয়মিত দু’টি রিল পোস্ট না করতে পারার জেরেই দু’জন ফলোয়ার তাঁকে ‘আনফলো’ করে দেন। ডেকান হেরাল্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, নিশা পুলিশকে বলেন, “স্বামী আমাকে দিয়ে বাসন মাজান এবং ঘর পরিষ্কার করার। এই সব কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি রিল বানানোর সময়ই পাচ্ছিলাম না। তাই আমার ফলোয়ার কমে গিয়েছে।”

কম যান না স্বামী বিজেন্দ্রও। স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, নিশা সারাক্ষণ ইনস্টাগ্রামেই ডুবে থাকেন এবং সংসারের দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা করেন।
এই বেনজির অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে দু’পক্ষকেই থানায় ডেকে পাঠানো হয়। থানার স্টেশন ইন-চার্জ অরুণা রাই প্রায় চার ঘণ্টা ধরে দু’জনের বক্তব্য শোনেন। ব্যক্তিগত ইচ্ছে এবং সংসারের দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং দাম্পত্য জীবনে শান্তি বজায় রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানো হয় দম্পতিকে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মিটমাট করে নিতে রাজি হয় দু’পক্ষই। শেষ পর্যন্ত কোনও মামলাও দায়ের হয়নি।