আজকাল ওয়েবডেস্ক: হুড়মুড়িয়ে ছুটছে ট্রেন, কামরায় তিলধারণের জায়গা নেই। সঙ্গে একনাগাড়ে হকারদের হাকডাক, যাত্রীদের কিচিরমিচির! তারই মধ্যে কোণার সিটে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে এক মধ্যবয়স্ক মহিলা। আবার গাড়িতে ঘুরতে বেরিয়ে সবাই হইহুল্লোরে মাতোয়ারা, দিব্যি ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন তরতাজা যুবক। রোজকার জীবনে প্রায়ই এমন দৃশ্যের নজির মেলে। হইহট্টগোলের মাঝে দু’চোখের পাতা এক করা তো বটেই, রীতিমতো নাক ডেকে ঘুমাতে পারেন অনেকে। যা নিয়ে মজার পাত্রও হতে হয় বই কী! তবে কোনও কিছুই যে যানবাহনে উঠলে ঘুমকে আটকাতে পারে না! আপনিও কি সেই তালিকায় রয়েছেন? কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এমন হয়? নেপথ্যে কি কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে? জেনে নেওয়া যাক গবেষণা কী বলছে।
চলন্ত গাড়ির নড়াচড়ার কারণেই আস্তে আস্তে দু'চোখে ঘুম নেমে আসে। আসলে চলন্ত গাড়িতে অনবরত কম্পন, মৃদু থেকে মাঝারি দুলুনি অনুভূত হয়। যা ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। ঠিক এইভাবেই শিশুদের ঘুমানোর জন্য দোলনায় দোলা দেওয়া হয়।
চলন্ত বাস, ট্রেন বা গাড়িতে এক ধরনের শব্দ দীর্ঘক্ষণ কানে আসে। যার ফলে সাময়িকভাবে শ্রবণ উদ্দীপনা কমে যায়। একটা সময় পর চোখ খুলে রাখার ইচ্ছাও কমে আসে। তখনই অন্য কিছুতে আর তেমন আগ্রহ থাকে না। ঝিমুনি আসে ধীরে ধীরে।
আমরা রাতে ঘুমাই আর দিনে জেগে কাজকর্ম করি। কিন্তু সাধারণত ট্রেন বা গাড়িতে স্বাভাবিক আলো এসে পড়ে না। তাই শরীর ঠিক কোন পরস্থিতিতে রয়েছে তা বুঝে উঠতে পারে না। ফলে ভিতর থেকে আমরা চালিকাশক্তি হারাই। ঝিমুনিও চলে আসে সহজে।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। তাই বাসে, ট্রেনে বা গাড়িতে সামান্য দুলুনিতে চোখ বুজে আসে। শান্ত পরিবেশে শরীর বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ ছাড়তে চায় না। এছাড়া যাত্রাপথ দীর্ঘ হলে একটানা স্থির হয়ে বসে থেকে একঘেয়েমি এসে যায়। তখনও ঘুমিয়ে পড়েন অনেকে।
যদিও সকলের ক্ষেত্রে এক রকম হয় না। বিশেষ করে যাত্রাপথে যারা মোবাইল ফোন ঘাঁটেন, বই পড়েন কিংবা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত থাকেন তাঁদের খুব একটা ঘুম আসে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে যদি ক্লান্তি থাকে তাহলে খানিকক্ষণ বাসে-ট্রেনে ঘুমিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
