অনেকেই প্রতিদিন বাথরুমে বেশ কিছু সাধারণ জিনিস ব্যবহার করেন। ডিওডরেন্টে, বডি স্প্রে, লোশন, পারফিউম-এর মতো জিনিসগুলো ছাড়া যেন দিন শুরু হয় না বিভিন্ন বয়সের মানুষের। কিন্তু এই অভ্যাস কি আদৌ সঠিক? সম্প্রতি এক শীর্ষস্থানীয় ইউরোলজিস্ট দাবি করেছেন, প্রতিদিনের এই অভ্যাসই ধীরে ধীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। বুঝে ওঠার আগেই অজান্তে শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক বাথরুম পণ্যে এমন রাসায়নিক থাকে যা ত্বক বা শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকে যায়। এগুলোকে বলা হয় হরমোন 'ডিসরাপ্টার' অর্থাৎ এমন উপাদান যা শরীরের স্বাভাবিক হরমোনের কাজকর্মে বাধা দেয়।

বেশিরভাগ ডিওডরেন্টে থাকে অ্যালুমিনিয়াম। এটি ঘাম বন্ধ করে দেয় ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে এই উপাদান ত্বকের ভেতর দিয়ে রক্তে মিশে যেতে পারে। এতে হরমোনের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়। বিশেষ করে বগলের আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ লিম্ফ নোড থাকায় ঝুঁকি আরও বাড়ে। অতিরিক্ত ব্যবহারে ক্লান্তি, হরমোনের গোলমাল এমনকী প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

বডি স্প্রে বা পারফিউমে থাকে ভলাটাইল কেমিক্যাল, যা স্প্রে করার সময় বাতাসে ভেসে যায়। বাথরুমের মতো বন্ধ জায়গায় এগুলো শ্বাসের সঙ্গে সরাসরি ফুসফুসে ঢোকে। দীর্ঘদিন এমন রাসায়নিক শ্বাসের মাধ্যমে নেওয়া হলে তা হরমোন সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, এমনকী হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লোশন ও ময়েশ্চারাইজারেও আছে বিপদ। অনেক লোশন ও ক্রিমে প্যারাবেন বা কৃত্রিম রাসায়নিক থাকে। এগুলো শরীরের প্রাকৃতিক হরমোনের মতো আচরণ করে। ফলে শরীর বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়তে পারে থাইরয়েড, ঋতুস্রাবচক্র, ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ত্বকের স্বাভাবিক গঠনের ওপর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সব জিনিসের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ না করলেও কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। যেমন পণ্য কেনার সময় লেবেল দেখে নিন। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক বা হার্বাল পণ্য ব্যবহার করুন। বাথরুমে ভাল বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন। অল্প ব্যবহারই ভালো অর্থাৎ বারবার স্প্রে বা ডিওডরেন্ট ব্যবহার করবেন না।