আধুনিক জীবনযাত্রায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে হার্টের উপরে। আজকাল বয়স ৩০ বছর পেরতে না পেরতেই বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। নেপথ্যে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস,শরীরচর্চার অভাব, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সহ বিভিন্ন কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মতো ক্রনিক রোগের হাত ধরে অল্প বয়সেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হৃদরোগ। তাই হৃদয়ের যত্ন নেওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের রোজকার কিছু খাদ্যাভ্যাস অজান্তেই হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিপদ ঠেকাতে কোন কোন খাদ্যাভ্যাসে বদল আনবেন, জেনে নিন-
১. অতিরিক্ত ঘি, মাখনঃ আমাদের দেশে রান্নায় ঘি ও মাখনের ব্যবহার বেশ পুরনো অভ্যাস। তবে এতে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) বাড়িয়ে ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল) কমিয়ে দেয়। এর ফলে ধমনিতে ফ্যাট জমে হার্ট ব্লকেজ তৈরি হয়। চিকিৎসকদের মতে, সীমিত মাত্রায় ঘি ব্যবহার করা উচিত। বিকল্প হিসেবে অলিভ অয়েল বা সূর্যমুখী তেল ব্যবহার অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
আরও পড়ুনঃ লিভার থেকে ছেঁকে বেরবে সব ময়লা! চেনা ৫ ফলেই মিলবে ফ্যাটি লিভারের সমাধান
২. তেলে ভাজা খাবারঃ সিঙারা, পকোড়া, লুচি কিংবা কচুরির মতো ডিপ ফ্রায়েড খাবার অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অংশ। ছাঁকা তেলে তৈরি হওয়া এই সব খাবারে ট্রান্স ফ্যাট ও অক্সিডাইজড কোলেস্টেরল থাকে , যা সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলো উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত হওয়ায় ওজনও দ্রুত বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝে মধ্যে এসব খাবার খাওয়া ক্ষতিকর নয়, তবে রোজকার খাদ্যাভ্যাসে রাখা একেবারেই উচিত নয়। সেক্ষেত্রে বেক করা বা এয়ার ফ্রাইয়ের মতো পদ্ধতি বেছে নেওয়া ভাল।
৩. অতিরিক্ত মিষ্টি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটঃ ভারতীয় মিষ্টির তালিকা যেমন লম্বা, তেমনি এগুলোর ঝুঁকিও কম নয়। চিনি ও ময়দা দিয়ে বানানো বিভিন্ন খাবার শরীরে বাড়তি ক্যালোরি ও চিনি সরবরাহ করে। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা বেড়ে যায় এবং ইনসুলিন রেজিসট্যান্স তৈরি হয় যা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ব্রাউন রাইস, ওট, মিলেট বা সম্পূর্ণ গমের আটা ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

৪. অতিরিক্ত নুন ও আচারঃ ভারতীয় খাবারে আচারের ব্যবহার বেশ চোখে পড়ে। এই আচার, পাপড় কিংবা অনেক চাটনিতেই থাকে অতিরিক্ত নুন। যার ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে যা সরাসরি স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিনের খাবারে নুনের পরিমাণ যতটা সম্ভব কমাতে হবে। রান্নায় ভেষজ ও মশলা ব্যবহার করে স্বাদ বাড়ানো যেতে পারে।
৫. অনিয়মিত খাওয়ার সময় ও অতিরিক্ত খাওয়াঃ অনেক সময় কাজের চাপে আমরা অনিয়মিত সময়ে খাই কিংবা একসঙ্গে অনেক বেশি খেয়ে ফেলি। এটি হজমের সমস্যা তৈরি করার পাশাপাশি শরীরে অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনে ছোট ছোট ভাগে খাবার খাওয়া উচিত এবং নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
