নিত্যদিনের খাবার শুধু শরীর নয়, আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে। যেমন কিছু খাবার নিয়মিত খেলে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বাড়তে পারে। আবার ঠিক উল্টোভাবে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার মস্তিষ্ককে দীর্ঘদিন সচল রাখতে সাহায্য করে।

কোন কোন খাবারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ে

প্রথমেই আসে অতি প্রক্রিয়াজাত বা আল্ট্রা-প্রসেসড খাবার। ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত চিপস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, প্যাকেটের বিস্কুট, সফট ড্রিঙ্কস-এই ধরনের খাবারে অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও ক্ষতিকর ফ্যাট থাকে। এগুলো শরীরে প্রদাহ বাড়ায়, রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে এবং ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি করতে পারে।

অতিরিক্ত চিনি ডিমেনশিয়ার আরেক বড় শত্রু। নিয়মিত মিষ্টি, কেক, পেস্ট্রি, চকোলেট বা মিষ্টি পানীয় খেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়। এর প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপরও, ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এছাড়াও প্রসেসড রেড মিট যেমন সসেজ, বেকন, হটডগ ইত্যাদি বেশি খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। এগুলোতে থাকা প্রিজারভেটিভ ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট স্নায়ুর স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেয়। খুব বেশি তেলে ভাজা বা অতিরিক্ত তাপে রান্না করা খাবারও মস্তিষ্কে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়াতে পারে।


ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে কোন কোন খাবার


মস্তিষ্ক ভাল রাখতে সবচেয়ে কার্যকর হল টাটকা ফল ও সবজি। শাক-সবজি, বেরি, আপেল, কমলা-এসব খাবারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মস্তিষ্কের কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।

গোটা শস্য বা হোল গ্রেন যেমন ব্রাউন রাইস, ওটস, ডালিয়া রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখে। এতে মস্তিষ্কের কার্যকারিয়া ভাল থাকে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ যেমন সালমন, সার্ডিন, ম্যাকারেল মস্তিষ্কের কোষের গঠন মজবুত করে এবং স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন অলিভ অয়েল, বাদাম, আখরোট, তিসি বীজ মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায়। পাশাপাশি ডিম, ডাল, টোফু ও লিন প্রোটিন স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী।


ডিমেনশিয়া একদিনে হয় না। বছরের পর বছর ভুল খাদ্যাভ্যাসই ঝুঁকি বাড়ায়। তাই যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে টাকটা, ঘরোয়া ও পুষ্টিকর খাবার বেছে নিলেই মস্তিষ্ক থাকবে সুস্থ ও সক্রিয়।