আজকাল ওয়েব ডেস্ক: বিনাপয়সায় মাথায় ম্যাসাজ নিয়ে আরাম পেতে গিয়ে প্রায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছিলেন কর্ণাটকের বল্লারি এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার নামের এক যুবক।সেলুনে গিয়ে নাপিতের ম্যাসাজের জোরালো ধাক্কা সামলাতে না পেরে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ৩০ বছরের ওই যুবক। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধা পেলে বা রক্তনালী ছিঁড়ে গেলে স্ট্রোক হয়। ম্যাসাজের চোটেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়েন যুবক বলে সংবাদংমাধ্যম সূত্রে খবর। সেলুনে গিয়ে বিনামূল্যে মাথায় ম্যাসাজ করান বলরাম।খানিকক্ষণ পর থেকেই তিনি অস্বস্তি অনুভব করেন।মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর।পেশায় এক গৃহসহায়ক বলরামের মাথায় ব্যথা শুরু হলে তিনি কাজ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে যান।

অপেশাদার নাপিতের বিনামূল্যের জোরালো মোচড়কে ডাক্তাররা ‘স্যালন স্ট্রোক’ বা ‘বিউটি পার্লার স্ট্রোক’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।ম্যাসাজের সময় ঘাড়ের উপরে চাপের হেরফেরের কারণে হঠাৎ করেই এমন হতে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায় এবং মস্তিষ্কের কিছু জায়গায় ক্ষতি হতে পারে বলে চিকিৎসকেরা মনে করছেন।

বিশেষত ছেলেরা সেলুনে অপেশাদার নাপিতের কাছে অন্যান্য রুপচর্চার কাজের পর পিঠ বা ঘাড়ের ম্যাসাজ নিতে পছন্দ করেন।প্রচণ্ড জোরে ঘাড়ে মোচড় দেওয়ায় ক্যারো়টিড ধমনী ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেছেন চিকিৎসকেরা।। মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে থাকার জন্য রাজকুমার দু’মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হন তিনি।মারাত্মক পরিণতি থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন বলে হাসপাতালের রিপোর্টে বলা হয়েছে।

নিউরোলজিস্টরা বলছেন, হেড ম্যাসাজ বা শ্যাম্পু ম্যাসাজ স্ট্রোকের মতো গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে।তা অনেকের কাছেই অজানা।

জোরালো ম্যাসাজ থেকে ভিবিএ অর্থাৎ ভাটিব্রোবালার ধমনী ডিস গ্ৰুপ, আর্টিড আর্টারি বা সার্ভিকাল আর্টারি ডিসকোর্টের ঝুঁকি তৈরি হয় এবং স্ট্রোকের শিকার হন ছেলেরা।

অ্যাথেরোক্লেরোসিস বা হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে এই ঝুঁকি বেশি থাকে।যা তাদের নার্ভের সমস্যা, রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হতে পারে। সুতরাং টিস্যুতে অত্যধিক চাপ যেন না পড়ে সেই কারণে ম্যাসাজ করার নির্দিষ্ট কৌশল জানেন এমন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেলুন ও নাপিতের থেকে ম্যাসাজ নিন।

মাথা ঘোরা, বমিভাব এবং দৃষ্টিশক্তির ব্যাঘাত হলে স্ট্রোক হতে পারে।আরাম পেতে অসুবিধা নেই, তবে নিতে হবে সতর্কতা। সেলুনে করা ঘাড়ের কাছে মট মট করা শব্দ যতই আরামদায়ক হোক না কেন, তা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন।