বর্তমানে ডায়েট ট্রেন্ডের মধ্যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত ওজন কমানোর জন্যই অনেকের এর প্রতি ঝোঁক বেড়েছে। তবে শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ডায়াবেটিস কমাতেই নয়, রক্ত জমাট বাঁধা অর্থাৎ ব্লাড ক্লট প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং, সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং মেনে চললে তা রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমায়। যা হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্ত জমাট বাঁধা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের অন্যতম বড় কারণ। তাই যাদের কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই খাদ্যাভ্যাস বড় আশীর্বাদ হতে পারে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ট্রেন্ডে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার খেয়ে নিতে হয়। আবার কিছু ঘণ্টা চলে একেবারে উপবাস। তখন ইতিমধ্যেই জমে থাকা ফ্যাট থেকে পুষ্টি ও এনার্জি সংগ্রহ করে শরীর। ইদানীং এভাবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি মেদ গলিয়ে নেওয়ার ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে শরীরকে বিশ্রাম দিলে রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর ফলে ধমনীতে অপ্রয়োজনীয় জমাট বাঁধার প্রবণতা কমে যায়। লাইফ মেটাবলিজম-এ প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, উপোস অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া থেকে উৎপাদিত ইন্ডোল-৩-প্রোপিওনিক অ্যাসিড (আইপিএ)-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে প্লেটলেট সক্রিয়করণকে বাধা দেয়, যা জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

গবেষণার জন্য ১৬০ জন করোনারি ধমনী রোগের রোগীর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে ইঁদুরের উপর পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে ১০ দিনের বিরতিহীন উপবাস আইপিএ- এর মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং প্লেটলেট সমষ্ঠি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়। এক্ষেত্রে সিমুলেটেড হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের পরে ইঁদুরগুলিতে হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি কম দেখা গেছে।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকর ভেবে রোজই ডাবের জল খান? উপকার হচ্ছে নাকি ‘বিষ’ যাচ্ছে শরীরে! জানলে শিউরে উঠবেন
শুধু তাই নয়, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শরীরে প্রদাহ কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং মেনে চলেছেন, তাদের মধ্যে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই অভ্যাস শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, বিশেষত যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য গুরুতর অসুখে ভুগছেন।
