আজকাল ওয়েবডেস্কঃ ঘুম থেকে উঠে কফির গন্ধ না পেলে যেন দিনটাই বৃথা! অনেকেই এমনটা মনে করেন। কফি মেজাজ চাঙ্গা করার কাজে একাই একশো। শুধু তাই নয়, এই পানীয় নিয়মিত খেলে হার্টের অসুখ, টাইপ ২ ডায়াবিটিস, গল স্টোন এবং পার্কিনসনসের মতো জটিল অসুখ প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু জানেন কি এই কফি আপনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারে। তবে সাধারণ কফি নয়, চোখের চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে ইনস্ট্যান্ট কফি। সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
অনেকেই ঝক্কি এড়ানোর জন্য নিয়মিত ইনস্ট্যান্ট কফি খান। আর এতেই নাকি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি থাকে। চীনের হুবেই মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ইনস্ট্যান্ট কফি পান করলে চোখের একাধিক সমস্যা, বিশেষ করে ‘ড্রাই এজ-রিলেটেড ম্যাকুলার ডেজেনারেশন’ (এএমডি)-এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গবেষণায়, প্রায় ৫ লক্ষের বেশি মানুষের জেনেটিক তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যেখানে ইনস্ট্যান্ট কফির সঙ্গে এবং এএমডি-র সম্পর্ক ধরা পড়েছে। এএমডি মূলত চোখের রেটিনার এমন একটি রোগ, যা সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পর শুরু হয়। এমডি হল চোখের এমন একটি অবস্থা যেখানে রেটিনার মধ্যবর্তী অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে দৃষ্টিশক্তি অস্পষ্ট বা বিকৃত হতে পারে। এতে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব না হলেও পড়তে অসুবিধা, কাউকে চিনতে না পারা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০ কোটি মানুষ এএমডি-আক্রান্ত, যা ২০৪০ সালের মধ্যে ২৯০ কোটি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।
ইনস্ট্যান্ট কফি তৈরির জন্য কফির বীজ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে পাউডার বা দানা রূপে রূপান্তর করা হয়। এটি গরম জলে গুলে দ্রুত কফি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। এই কফি দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায়। অতিরিক্ত প্রসেসিং করানোর কারণে এতে ক্ষতিকর উপাদান যুক্ত হতে পারে। অন্যদিকে, গ্রাউন্ড কফি হল ভাজা কফি বীজকে চূর্ণ করে তৈরি করা প্রাকৃতিক কফি এতে তেমন কোনও প্রক্রিয়াজাতকরণ হয় না এবং এর স্বাদ ও ঘ্রাণ ইনস্ট্যান্ট কফির তুলনায় অনেক বেশি তীব্র। ইনস্ট্যান্ট কফি বাদে গ্রাউন্ড বা ডিক্যাফেইনেটেড কফির ক্ষেত্রে এএমডি-র ঝুঁকি পাওয়া যায়নি। গবেষকরা মনে করছেন, ইনস্ট্যান্ট কফি প্রস্তুতের সময় দেওয়া কিছু রাসায়নিক উপাদান যেমন অ্যাক্রিলামাইড, অক্সিডাইজড লিপিড এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
গবেষকদের মতে, যাদের এএমডি হওয়ার পারিবারিক ইতিহাস আছে বা যাদের প্রাথমিক পর্যায়ে চোখের সমস্যা দেখা রয়েছে, তাঁদের ইনস্ট্যান্ট কফি খাওয়া কমানো উচিত। চাইলে গ্রাউন্ড কফি খেতে পারেন।
