আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবী বৈচিত্র্যে ভরা, বিভিন্নতা রয়েছে সংস্কৃতিতেও। প্রশান্ত মহাসাগরীয় একটি দেশ পাপুয়া নিউ গিনির একটি প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে বাস করে সাম্বিয়া নামের এক উপজাতি। এই জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও জীবনযাপন নানা বিচিত্র আচার-অনুষ্ঠানে পূর্ণ। আর সেই সব আচার অনুষ্ঠান নিয়েই আগ্রহ তৈরি হয়েছে নৃবৈজ্ঞানিকদের মধ্যে। এই উপজাতির সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত সামাজিক রীতি হল- কিশোরদের প্রাপ্তবয়স্ক করে তোলার এক পর্যায়ে তাঁদের বীর্য পান করানো হয়। শুনতে অবাক লাগলেও এই প্রথা স্থানীয় সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে বহু প্রজন্ম ধরে টিকে রয়েছে।
কেন করা হয় এমন?
সাম্বিয়া সংস্কারে বিশ্বাস করা হয়, জন্মের সময় শিশুর মধ্যে পুরুষত্ব বা ‘যৌন শক্তি’ থাকে না। তাঁরা মনে করেন, এই শক্তি কেবলমাত্র প্রবীণ পুরুষদের বীর্যের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। এই বিশ্বাস থেকেই, ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী কিশোরদের কৈশোরের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রবীণদের বীর্য পান করতে উৎসাহিত করা হয়।
সাম্বিয়া সমাজে পুত্র সন্তানদের অল্প বয়সেই মায়ের সান্নিধ্য থেকে সরিয়ে নিয়ে পুরুষদের পৃথক একটি দলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন ধাপে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন ধরনের আচার পালন করতে বলা হয়। এই প্রথার অংশ হিসেবে মুখে ইচ্ছাকৃত রক্তপাত ঘটানো হয়, বীর্য পান করানো হয় এবং যুদ্ধবিদ্যা ও সাংস্কৃতিক নিয়ম শেখানো হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস এই কাজগুলি ‘ছেলে’ থেকে ‘পুরুষ’ হয়ে ওঠার জন্য একান্ত জরুরি।
স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রথা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। অনেকে সমালোচনাও করেছেন, বিশেষত নৈতিকতা ও শিশু অধিকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের মধ্যে এই নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। তবে নৃবৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি থেকে এই ধরনের বিষয় গবেষণার মূল্যবান উপাদান, যা মানব সভ্যতার বৈচিত্র্য ও মানসিক গঠনকে বুঝতে সাহায্য করে।
