আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক, দুই নয়, টানা ১৪ বছর ধরে উগান্ডার লুঙ্গাঙ্গা গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ‘ওসামা’। ৮০ জনকে নির্মম ভাবে হত্যা করে সে। তবে ওসামা কোনও মানুষ নয়। সে এক বিশালকায় নীল নদের কুমির। ১৯৯১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত, এই মানুষখেকো কুমিরটি একের পর এক গ্রামবাসীকে হত্যা করে খেয়ে ফেলেছিল বলে জানা যায়।
দৈত্যাকার এই কুমিরটি লম্বায় ছিল প্রায় ১৬ ফুট, ওজনে প্রায় এক টনের কাছাকাছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী কুমিরটি শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক, কাউকেই রেয়াত করত না। সংবাদমাধ্যমে স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন, ভিক্টোরিয়া হ্রদের ধার থেকে লোকজনকে আচমকা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেত ওসামা। শোনা যায়, মানুষ শিকার করতে অদ্ভুত এক পদ্ধতি ব্যবহার করত সে। মাছ ধরতে নৌকা করে হ্রদে যাওয়া মৎস্যজীবীদের নৌকা উল্টে দিত এই কুমির। তার পর মৎসজীবীরা জলে পড়ে গেলেই একের পর এক ব্যক্তিকে খেয়ে ফেলত ওসামা।
ওসামার আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে স্থানীয়দের মধ্যে একসময় বিশ্বাস জন্মেছিল, কুমিরটি সাক্ষাৎ শয়তানের দূত। অবশেষে ২০০৫ সালে, টানা এক সপ্তাহের এক রুদ্ধশ্বাস অভিযানের পর তাকে কাবু করতে সক্ষম হয় একটি বিশেষ শিকারী দল। প্রায় ৫০ জন গ্রামবাসী ও বন দফতরের কর্তাদের যৌথ চেষ্টায়, গরুর মাংসের টোপ দিয়ে ফাঁদ পেতে ধরা হয় ওসামাকে।
তবে ধরার পর কিন্তু কুমিরটিকে মারা হয়নি। বরং, ‘উগান্ডা ক্রোকস’ নামক একটি কুমির সংরক্ষণ কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। সেখানে প্রজনন কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাখা হয়েছে তাকে। তবে ওসামার ত্রাসের রাজত্ব শেষ হলেও এখনও তার আক্রমণে নিহতদের পরিবার-পরিজন, সকলেই আজও সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলির কথা মনে করে শিউরে ওঠেন।
