আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের ভাঙন নিয়ে কবি জয় গোস্বামী এককালে লিখেছিলেন “একটি বিচ্ছেদ থেকে পরের বিচ্ছেদে যেতে যেতে কয়েকটি দিন মাত্র মাঝখানে পাতা আছে মিলনের সাঁকো’। কবি জয় গোস্বামীর এই কবিতা পড়ে কান্নাকাটি করে চোখের জলে নাকের জলে দশা হয়েছে, এমন মানুষের অভাব নেই। আসলে প্রতিটা সম্পর্ক একটি ব্যক্তিগত রাজনীতি। তার নিজস্ব সমীকরণ রয়েছে। ঠিক সেকারণে যেমন সব সমীকরণ মেলে না তেমনই প্রতিশ্রুতি থাকলেও সব সম্পর্ক টেকে না। সম্পর্ক থাকলে সম্পর্ক ভাঙার আশঙ্কাও থাকে।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
প্রেমে পড়ার অভিজ্ঞতা যেমন মধুর তেমনই বিচ্ছেদ বেদনার। প্রণয় যেমনই হোক, তার সামাজিক স্বীকৃতি থাক বা না থাক বিচ্ছেদের ব্যথা তাতে কম হয় না। প্রেম হোক বা বিবাহ, বিচ্ছেদের পর মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন অনেকেই। কিন্তু নারী না পুরুষ, সম্পর্কের ভাঙনে বেশি মর্মাহত হন কারা? কারা বেশি কষ্ট পান সঙ্গীর বিরহে? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এল সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
বিজ্ঞান পত্রিকা ‘বিহেভিয়ারল অ্যান্ড ব্রেইন সায়েন্সেস’-এ প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, মহিলারা অন্যান্য অনেক বিষয়ে এগিয়ে থাকলেও মেয়েদের তুলনায় সম্পর্কের বিষয়ে বেশি যত্নশীল পুরুষরা। বার্লিনের হামবোল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই গবেষণা চালিয়েছেন। সেই গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, কোনও স্থায়ী সম্পর্ক ভেঙে গেলে নারীদের তুলনায় ছেলেরা অনেক বেশি মানসিক আঘাত অনুভব করেন। বাহ্যিক উদ্দীপনার মাধ্যমে তার প্রকাশ হোক বা না হোক, অন্তরে অন্তরে ক্ষত বিক্ষত হয় পুরুষদের হৃদয়।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
প্রসঙ্গত, এই গবেষণার জন্য লিঙ্গবৈষম্য এবং বিষমকামী সম্পর্কের উপর মোট ৫০ টি গবেষণাপত্র পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। সেখান থেকেই এই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তাঁরা।
তবে এখানেই শেষ নয়। গবেষণাটি আরও জানাচ্ছে, প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে নারীরাই সম্পর্ক ভাঙার পথে প্রথম পা বাড়ান। অর্থাৎ কোনও সম্পর্ক থেকে বেরোতে চাইলে পুরুষরা নন, নারীরাই প্রথম পদক্ষেপ করেন। এই গবেষণায় পিইউ রিসার্চ সেন্টারের একটি সমীক্ষা উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলারা নিজেদের একাকিত্বের কথা বলতে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ। যেমন প্রায় ৫৪ শতাংশ নারী মায়ের সঙ্গে একাকিত্বের যন্ত্রণা ভাগ করে নেন। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে এই কাজ করেন মাত্র ৪২ শতাংশ। একই বিষয় প্রযোজ্য বন্ধু এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ক্ষেত্রেও। বন্ধুর কাছে নিজের মনের কথা জানান ৫৪ শতাংশ নারী। কিন্তু শতকরা ৩৮ জন পুরুষ বন্ধুদের কাছে একথা বলেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে ( ৪৪% বনাম ২৬%) বা মনোবিদের কাছে (২২% বনাম ১৬%) নিজের একাকিত্বের কথা বলতেও অনেক বেশি সাবলীল নারীরা।
কিন্তু কেন এমন হয়? গবেষকদের দাবি, এর কারণ মূলত সামাজিক পরিস্থিতি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করাকে দুর্বলতা হিসাবে দেখেন বহু পুরুষ। তাই সম্পর্ক ভাঙার পরেও নিজের কষ্ট চেপে রাখাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন তাঁরা। তবে মাথায় রাখতে হবে যে কোনও গবেষণাই বিতর্ক সাপেক্ষ। তাই এই গবেষণাটিকেই ধ্রুব সত্য মেনে নেওয়া উচিত নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
