আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় সৌন্দর্য্যের মানে বিভিন্ন। পশ্চিমে যেখানে মেদহীন পেশিবহুল সুঠাম মাংসল চেহারাকে সৌন্দর্য্যের পরাকাষ্ঠা বলে মনে করা হয়, সেখানে আফ্রিকার একটি উপজাতির কাছে পুরুষদের সৌর্ন্দয্যকে মাপা হয় একেবারে অন্যভাবে। ইথিওপিয়ায় বদি উপজাতির মানুষদের কাছে যে পুরুষের ভুঁড়ি সবচেয়ে মোটা তিনিই তত বেশি সুন্দর। মহিলাদের কাছে তাঁর কদরও ততই বেশি।

ইথিওপিয়ায় গভীরে এক প্রত্যন্ত জায়গা ওমো উপত্যকায় বাস এই উপজাতির। সেখানে প্রতিবছর কায়েল নামের এক উৎসব হয়। এই উৎসবে টানা ছয় মাস ওজন বাড়ানোর খেলায় মাতেন পুরুষরা। টানা ছয় মাস নিজস্ব কুটিরে থেকে তাঁরা চেষ্টা করেন যতটা সম্ভব মোটা হওয়ার। এই সময় তাঁরা গরু-মোষ ইত্যাদি পশুর রক্ত পান করেন। সঙ্গে খান প্রচুর পরিমাণ দুধ। টানা ছয় মাস কোনও ধরনের নারীসঙ্গ করেন না তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এই উৎসব কিন্তু আজকের নয়। বহু প্রাচীন কাল থেকেই এই সম্প্রদায়ের মধ্যে চলে আসছে প্রথাটি। এই সময় পুরুষদের চেহারায় যে পরিবর্তন দেখা যায়, সেটাকে আসলে ওই অঞ্চলে শক্তি, সামর্থ, সামাজিক প্রভাব প্রতিপত্তির রূপক হিসাবে ধরা হয়। উপজাতির প্রতিটি পরিবার থেকে একজন পুরুষ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। টানা ছয় মাস ব্রহ্মচর্য পালনের পর কায়েল উৎসবের দিন কুটির ছেড়ে বেরিয়ে আসেন প্রতিযোগীরা। সারা শরীরে ছাই এবং কাদা মাখেন। সব প্রতিযোগীদের একত্রিত করে দেখা হয় সবচেয়ে স্থূল কে? যিনি সবচেয়ে স্থূল তাঁকেই বিজয়ী হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: নিজেই জানতেন না তিনি অন্তঃসত্ত্বা! মলত্যাগ করতে গিয়ে সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে


বিজয়ীর জন্য প্রত্যক্ষ ভাবে বিরাট কোনও পুরস্কার না থাকলেও, সামাজিক ভাবে সারাজীবনের জন্য তাঁকে নায়ক হিসাবে গণ্য করেন উপজাতির মানুষরা। তাঁদের কাছে এই জয় এক বিরাট সম্মানের প্রতীক। ফলে সামাজিক ভাবেও বিজয়ীর প্রভাব প্রতিপত্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে এই উপজাতির নারীরা স্থূলকায় পুরুষ খুবই পছন্দ করেন। ফলে যিনি জয় লাভ করেন তাঁর পরিবার পরিকল্পনা সহজ হয়ে যায়। সহজেই বিবাহযোগ্যা মহিলা খুঁজে পান তিনি।

বছর খানেক আগে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক এই প্রথা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তিনি এও জানান, শুনে যতটা সহজ মনে হচ্ছে বিষয়টা আদৌ ততটা সহজ নয়। যে হারে রক্ত এবং দুধ পান করতে হয় তাতে বহু পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই আক্ষরিক অর্থেই যাঁরা টানা ছয় মাস কঠোর ভাবে সব কিছু পালন করতে পারেন তাঁরাই হয়ে ওঠেন জয়ের প্রকৃত দাবিদার।