আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই দোরগোড়ায় দীপাবলি। আলোর উৎসবে মেতে ওঠার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে। কিন্তু উৎসবের এই মরসুমে খরচের বহরও নেহাত কম নয়। নতুন পোশাক, মিষ্টিমুখ, আর প্রিয়জনের জন্য উপহার- এই সবকিছুর পরে ঘর সাজানোর জন্য বাজেট থাকে না বললেই চলে। তবে মন খারাপের কারণ নেই। সামান্য বুদ্ধি আর সৃজনশীলতাকে কাজে লাগালেই নামমাত্র খরচে আপনার গৃহকোণ হয়ে উঠতে পারে ঝলমলে। কীভাবে? রইল কিছু সহজ উপায়।

১। আগুনের পরশমণি
দীপাবলির প্রধান আকর্ষণ মাটির প্রদীপ। দামি টুনি লাইটের ভিড়ে এর কদর কমেনি একটুও। বাজার থেকে কম দামে কিনে আনুন একগুচ্ছ মাটির প্রদীপ। এরপর নিজের কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগান। জলরং বা অ্যাক্রিলিক রঙে রাঙিয়ে দিন সেগুলিকে। বাড়ির ছোটদেরও সঙ্গে নিন, দেখবেন তাদের উৎসাহে প্রদীপগুলি আরও রঙিন হয়ে উঠবে। ঘরের কোণে, বারান্দার রেলিং বা সদর দরজার সামনে সারি দিয়ে এই প্রদীপ জ্বালালে যে স্নিগ্ধতা তৈরি হবে, তার সঙ্গে কোনও দামি আলোর তুলনা চলে না।
২। ফুলের সাজ
উৎসব মানেই ফুলের সাজ। গাঁদা ফুলের মালা ছাড়া দীপাবলির সাজ অসম্পূর্ণ। অল্প খরচে বাজার থেকে গাঁদা ফুল কিনে এনে লম্বা মালা তৈরি করে নিন। সদর দরজা বা ঘরের দেওয়ালে ঝুলিয়ে দিন। একটি বড় পাত্রে বা কাঁসার থালায় জল ভরে তার উপর ছড়িয়ে দিন গাঁদা ফুলের পাপড়ি আর ভাসিয়ে দিন কয়েকটি মোমবাতি বা প্রদীপ (ফ্লোটিং ক্যান্ডেল)। বসার ঘরের মাঝখানে বা কোনও এক কোণে রাখলে এর নান্দনিক ছোঁয়া সকলের নজর কাড়বে। আম্রপল্লব দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মঙ্গল তোরণও।
৩। ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়েই ভোলবদল
বাড়িতে জমে থাকা পুরনো কাচের বোতল বা বয়াম ফেলে না দিয়ে কাজে লাগান। সেগুলির ভেতরে ঢুকিয়ে দিন সরু তারের টুনি লাইট। দেখুন কেমন চমৎকার ল্যাম্পশেড তৈরি হয়ে গিয়েছে! পুরনো শাড়ি বা রঙিন ওড়না ব্যবহার করে জানলার পর্দা বা সোফার কভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে মুহূর্তে ঘরের ভোল বদলে যাবে।
৪। মনের রঙে আলপনা
দীপাবলিতে দামি রঙের আবির না কিনে ব্যবহার করুন চালের গুঁড়ো। বাড়ির মেঝেতে বা সদর দরজার সামনে এঁকে ফেলুন সাবেকী ডিজাইনের আলপনা। মাঝে বসিয়ে দিন একটি বড় প্রদীপ। খরচ প্রায় নেই, অথচ এর সৌন্দর্য অমলিন। ফুলের পাপড়ি দিয়েও তৈরি করতে পারেন রঙিন আলপনা, যা দেখতেও সুন্দর আর পরিবেশবান্ধবও।
৫। কাগজের কারসাজি
রঙিন কাগজ দিয়ে সহজেই বানিয়ে ফেলা যায় সুন্দর লণ্ঠন। ইউটিউব দেখে শিখে নিতে পারেন বিভিন্ন ধরনের কাগজের ফুল বা দেওয়ালসজ্জার উপকরণ তৈরির কৌশল। নামমাত্র খরচে এই হাতে তৈরি জিনিসগুলি আপনার রুচিশীলতার পরিচয় দেবে এবং ঘরকে দেবে এক স্বতন্ত্র চেহারা।
আসলে উৎসবের সাজ মানে দামি জিনিসের প্রদর্শনী নয়, বরং মনের আনন্দ আর সৃজনশীলতার প্রকাশ।
