অনেকেরই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখা অভ্যাস রয়েছে। কাজের চাপ, রাস্তায় যাতায়াত বা শৌচাগার না থাকার কারণে অনেককে প্রস্রাব আটকে রাখতে দেখা যায়। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই অভ্যাস শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর । এমবকী দীর্ঘমেয়াদে ভয়ঙ্কর রোগ ডেকে আনতে পারে। অনেকক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখলে শরীরে কোন কোন সমস্যা হানা দিতে পারে, জেনে নিন-
*মূত্রথলির ক্ষতিঃ প্রস্রাব বেশি সময় আটকে রাখলে মূত্রথলি ফুলে যায় ও এর পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। নিয়মিত এমন করলে প্রস্রাবের স্বাভাবিক ক্ষমতা কমে যেতে পারে। সাধারণত যখন মূত্রাশয় পূর্ণ থাকে তখন এটি প্রসারিত হয় এবং মূত্র ত্যাগ করলে সেটি আবার সঙ্কুচিত হয়ে যায়। কিন্তু এক নাগাড়ে প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রাশয় নিজের আকারে ফিরতে পারে না। ফলে আকারে বেড়ে যায়। মূত্রাশয় ফেটে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
আরও পড়ুনঃ সার্জারি ছাড়াই মাত্র ৩ দিনে কমবে থলথলে ভুঁড়ি! রাতে এই ফলের পানীয়তে চুমুক দিলে হাতেনাতে পাবেন ম্যাজিকের মতো ফল
*সংক্রমণের ঝুঁকিঃ প্রস্রাব আটকে রাখলে জীবাণু জমে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় মূত্রথলিতে প্রস্রাব আটকে থাকার ফলে ব্যাক্টেরিয়াগুলো দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে যা ডেকে আনে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ। এতে জ্বালা, ব্যথা, জ্বর সহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
*কিডনির ওপর মারাত্মক প্রভাবঃ বারবার প্রস্রাব চেপে রাখলে প্রস্রাবের চাপ উল্টো দিকে গিয়ে কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এতে কিডনি ফেইলিওর পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য বেরিয়ে যেতে না পারায় কিডনির ভিতরে বর্জ্য পদার্থ জমে কঠিন হয়ে যায়। প্রস্রাবে থাকা খনিজ পদার্থ জমে ধীরে ধীরে পাথর তৈরি করতে পারে। যা থেকে ব্যথা, সংক্রমণ কিংবা রক্তপাতের মতো গুরুতর সমস্যাও হতে পারে।

*তলপেটে ব্যথা ও অস্বস্তিঃ দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখলে পেট ভারী লাগা, ব্যথা ও ক্র্যাম্প দেখা দিতে পারে।
*মহিলাদের জন্য বাড়তি বিপদঃ মহিলারা যেহেতু দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখেন, এর জেরে তাঁদের মূত্রাশয়ে চাপ পড়ে। তাই প্রস্রাবের বেগ এলে তা ত্যাগ করতে হবে। তবে প্রস্রাব করার সমস্যা থাকলে ৩০ মিনিট মতো প্রস্রাব আটকে রাখা যেতে পারে। কিন্তু এর থেকে বেশিক্ষণ চেপে রাখলে মূত্রাশয় দুর্বল হয়ে ফেটে যেতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রস্রাব চেপে রাখলে পেলভিক ফ্লোর দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ভবিষ্যতে প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হয়। হাঁচি, কাশির সময় অজান্তেই কিছুটা প্রস্রাব বার হয়ে যেতে পারে। মূত্রত্যাগের প্রবণতাও বাড়ে।
আরও পড়ুনঃ রাতে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করেই কেটে যায়? শোওয়ার আগে খান এই ৩ ফল, নিমেষে দু’চোখ জুড়ে আসবে ঘুম
করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে প্রস্রাবের চাপ অনুভব করলে তা সঙ্গে সঙ্গে করে ফেলা উচিত। অযথা দেরি না করলে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। যদি কারও বার বার প্রস্রাব আটকানোর অভ্যাস থেকে যায় বা প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
