আজকাল ওয়েবডেস্ক: জ্যোতিষশাস্ত্র এবং প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, বিবাহিত হিন্দু নারীদের সিঁদুর পরার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও বিধি রয়েছে। মনে করা হয়, এই নিয়মগুলি সঠিকভাবে পালন করলে দাম্পত্য জীবন সুখের হয় এবং স্বামীর মঙ্গল হয়। অন্যদিকে, কিছু ভুল স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সিঁদুর পরার সঠিক নিয়ম (জ্যোতিষ ও প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী)
১.  স্নানের পর পরিধান: প্রতিদিন স্নান সেরে, পরিষ্কার বস্ত্র পরে সিঁদুর পরা উচিত। এটিকে শুদ্ধাচারে সিঁদুর ধারণ বলা হয়।
২.  সিঁথির মাঝখানে: সিঁদুর সর্বদা সিঁথির মাঝ বরাবর লম্বা করে পরা উচিত। বিশ্বাস করা হয়, এটি স্বামীর আয়ু বৃদ্ধি করে এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়ায়। সিঁথির পাশে বা একদিকে সিঁদুর পরাকে অশুভ মনে করা হয়, যা স্বামীর মধ্যে উদাসীনতা বা দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
৩.  আঙুলের ব্যবহার: সাধারণত অনামিকা (রিং ফিংগার) আঙুল দিয়ে সিঁদুর পরার প্রথা প্রচলিত। কিছু মতে, তর্জনী (ইনডেক্স ফিংগার) দিয়ে সিঁদুর পরলে মানসিক শান্তি এবং মধ্যমা (মিডল ফিংগার) দিয়ে পরলে আয়ু বৃদ্ধি পায়, তবে অনামিকা আঙুলের ব্যবহারই সর্বাধিক স্বীকৃত।
৪.  দিক: সম্ভব হলে পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে সিঁদুর পরা শুভ বলে মনে করা হয়।
৫.  নিজের সিঁদুর: নিজের কেনা বা স্বামীর দেওয়া সিঁদুরই ব্যবহার করা উচিত। অন্য কারও কাছ থেকে ধার করা বা অন্যের ব্যবহৃত সিঁদুর পরা অশুভ বলে মনে করা হয়।
৬.  পড়ে যাওয়া সিঁদুর ব্যবহার নয়: হাত থেকে পড়ে যাওয়া সিঁদুর তুলে আবার ব্যবহার করাকে অশুভ বলে মনে করা হয়।
৭.  খালি পেটে বা ক্রোধে সিঁদুর পরা খারাপ: অনেকে মনে করেন, একেবারে খালি পেটে বা খুব রেগে থাকা অবস্থায় সিঁদুর পরা উচিত নয়, এতে সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা আসতে পারে।


সিঁদুর হিন্দু বিবাহিত নারীদের জন্য একটি অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন। এটি শুধু একটি প্রসাধনী নয়, বরং স্বামীর প্রতি ভালবাসা, নিষ্ঠা এবং তার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনার প্রতীক। তবে, এটাও মনে রাখা জরুরি যে, এই নিয়ম ও বিশ্বাসগুলি মূলত শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা এবং লোকপ্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। দাম্পত্য সম্পর্কের মূল ভিত্তি হল পারস্পরিক বোঝাপড়া, ভালবাসা, বিশ্বাস এবং একে অপরের প্রতি সম্মান। এই তথ্যগুলি প্রচলিত বিশ্বাস এবং বিভিন্ন জ্যোতিষীয় ব্যাখ্যার উপর নির্মিত। এগুলির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাও থাকতে পারে এবং ব্যক্তিগত বিশ্বাস অনুসারে এর গুরুত্ব পরিবর্তিত হতে পারে।