ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, জয়েন্টের সমস্যা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজনে ওজন কমানো অপরিহার্য। এটি কেবল চেহারার সাথে সম্পর্কিত নয়, সামগ্রিক সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ুও অনেক সময় ওজনের উপর নির্ভরশীল। অতিরিক্ত ওজন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনার জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করতে পারে। সকালের স্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাস বিপাককে অনুকূল করে এবং স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই উপায়ে ক্যালোরির ঘাটতি বজায় রাখা সহজ করে ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে। এটি ক্লান্তিও রোধ করতে পারে, যার ফলে সারাদিন চনমনে থাকা যায়।
সকালের কয়েকটি ভাল অভ্যাস সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এবং বিশেষ করে ওজন কমানোর জন্য অবিশ্বাস্যভাবে উপকারী হতে পারে। এই অভ্যাসগুলি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস দূর করতে পারে, মেজাজ ভাল রাখতে পারে, কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, হজমশক্তি উন্নত করতে পারে এবং হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারে। ওজন কমানোর জন্য এই বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ।
সকালের কিছু অভ্যাস যা আপনার ওজন কমানোর যাত্রায় বিস্ময়কর ভূমিকা পালন করতে পারে
এক গ্লাস গরম জল দিয়ে শুরু করুন
প্রথমেই জল পান করলে শরীর আর্দ্র থাকে, হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বিপাক কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ডিটক্সিফাই করার জন্য লেবু বা এক চিমটি দারুচিনি যোগ করুন।
হালকা স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করুন
সকালের ১০-১৫ মিনিটের স্ট্রেচ রক্ত প্রবাহ উন্নত করে, কর্টিসলের মাত্রা কমায় এবং আপনার শরীরকে সারাদিনের জন্য প্রস্তুত করে। এটি লো-ইমপ্যাক্ট এবং ফ্যাট বিপাককে তরান্বিত করার সঙ্গেই শরীরের স্টিফনেস দূর করে।
সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসুন
সকালের আলো আপনার বডি ক্লককে সেট করে। এটি শরীরে সেরোটোনিন (খুশির হরমোন) বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং রাতে মেলাটোনিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যাতে ভাল ঘুম হয়। সুস্থ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সঠিক ঘুম অপরিহার্য, যা ওজন কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে।
দিনের জন্য আপনার খাবারের পরিকল্পনা করুন
আপনি যখন জানেন যে সারাদিন কী খাবেন, তখন আপনার খাওয়ার ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আগে থেকে পরিকল্পনা করলে পুষ্টির ভারসাম্য নিশ্চিত করার সঙ্গে ক্যালোরির পরিমাণও ঠিক থাকে।
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত জলখাবার করুন
ডিম, গ্রীক দই, মুগ চিলা ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ জলখাবার আপনার পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে। দুপুরে খিদে কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। চিনিযুক্ত সিরিয়াল বা শুধুমাত্র কার্বোহাইড্রেট-ভিত্তিক খাবার এড়িয়ে চলুন।
কিছু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট অন্তর্ভুক্ত করুন
সকালে অ্যাভোকাডো, বাদাম বা সিডসের মতো ভাল ফ্যাট পেট ভরায় এবং বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। এগুলি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং হরমোনের ভারসাম্যও বজায় রাখে, যা ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সকালে প্রথমেই ফোন এবং স্ক্রিন এড়িয়ে চলুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে থাকা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে এবং মনোযোগ সহকারে খাবার খাওয়া থেকে আপনাকে বিরত রাখতে পারে। পরিবর্তে সকাল শুরু করুন নিজের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে।
গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি পান করুন
গ্রিন টি এবং ব্যাক কফি (পরিমিত পরিমাণে) উভয়ই বিপাক এবং ফ্যাট পোড়াতে সাহায্য করে। সকালের জলখাবারের ৩০-৪৫ মিনিট পরে এগুলি পান করুন এবং সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
