অনেকেরই গরম চায়ের কাপে চুমুক না নিলে দিন শুরু হয় না। সঙ্গে দিনভর যতই কর্মব্যস্ততা থাকুক, চাপ্রেমীদের চায়ের থেকে আলাদা করা মুশকিল। শুধু মেজাজ চাঙ্গা রাখতেও নয়, নিয়মিত চা খেলে একাধিক শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদের দাবি, সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ব্ল্যাক টি অন্যতম। এমনকী গবেষণা বলছে, চা খেলে কমতে পারে মৃত্যুর ঝুঁকি। 

নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে চা পান করলে আয়ু বাড়তে পারে, সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণা এমন ইঙ্গিত দিয়েছে। বিশেষত গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি বা ভেষজ চা-তে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান শরীরকে নানা রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এবং বার্ধক্যের প্রভাব ধীর করতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চায়ে রয়েছে পলিফেনল ও ক্যাটেচিন নামের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো শরীরের কোষকে ফ্রি-র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, যার ফলে হৃদরোগ, ক্যানসার সহ বয়সজনিত নানা সমস্যা প্রতিরোঝ করা যায়। নিয়মিত চা পানের ফলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

আরও পড়ুনঃ গরুর দুধের চেয়ে তিন গুণ বেশি পুষ্টিকর! প্রোটিন-অ্যামিনো অ্যাসিডে ভরপুর এই পতঙ্গের দুধেই মিলবে সবচেয়ে বেশি উপকার

এছাড়া চা বিপাকক্রিয়া সচল রাখতে সহায়ক এবং অতিরিক্ত চর্বি জমা রোধ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও চায়ের উপাদান রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, চায়ের থিয়ানিন নামের একটি উপাদান মানসিক প্রশান্তি আনে, স্ট্রেস কমায় এবং মনোযোগ বাড়ায়।

তবে উপকারী বলে অতিরিক্ত চা পান মোটেই ঠিক নয়। বিশেষ করে বেশি চিনি ও দুধ মিশিয়ে চা খেলে উল্টো ক্ষতিকর হতে পারে। এতে ঘুমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি ও দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তাই পরিমিত মাত্রায় এবং সম্ভব হলে কম চিনি দিয়ে চা পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গবেষণা বলছে, রোজ দুই থেকে তিন কাপ পরিমাণ চা দীর্ঘায়ুর জন্য উপকারী হতে পারে। সঠিক জীবনযাপনের সঙ্গে এই অভ্যাস মিলিয়ে নিলে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।

নিয়মিত চা খেলে কী কী উপকার পাবেন- 

* অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ – চায়ে রয়েছে ক্যাটেচিন ও পলিফেনল, যা কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর করে।

* হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায় – নিয়মিত চা পান রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

আরও পড়ুনঃ আর এপাশ-ওপাশ নয়, এবার বিছানায় শুলেই দু'চোখ জুড়ে আসবে ঘুম! শুধু মেনে চলুন এই কটি নিয়ম

* মেটাবলিজম ঠিক রাখে – গ্রিন টি বিশেষ করে ফ্যাট বার্ন এবং বিপাকক্রিয়া সচল রাখতে সাহায্য করে।

* ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – চায়ের কিছু উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

* স্ট্রেস কমায় – চায়ের থিয়ানিন ও সুবাস মানসিক প্রশান্তি আনে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।