চোখের পাতা হঠাৎ কেঁপে ওঠা খুবই চেনা একটি সমস্যা। যাকে সাধারণভাবে 'চোখ কাঁপা' 'চোখ নাচা' বলা হয়৷ অনেকেই এটিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। মনে রাখবেন, চোখ কাঁপা সবসময় বিপজ্জনক নয়, কিন্তু বারবার বা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবহেলা করা বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার চোখ কাঁপা বা দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকলে তা একাধিক মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। যেমন- 

ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চোখের পেশি ক্লান্ত হয়ে যায়, ফলে কাঁপুনি দেখা দেয়।

অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ: মানসিক চাপ স্নায়ুতে টান সৃষ্টি করে, যা চোখ কাঁপার অন্যতম কারণ।

আরও পড়ুনঃ ঠান্ডা লাগা থেকে ভয় পাওয়া! সবেতেই কেন গায়ে কাঁটা দেয়, আসল কারণটা জানলে অবাক হবেন

বেশি চা বা কফি: অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্নায়ু উদ্দীপিত করে এবং চোখে কাঁপুনি আনতে পারে।

চোখের ক্লান্তি: মোবাইল, কম্পিউটার বা টিভির স্ক্রিনে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশি টানটান হয়ে যায়।

পুষ্টির ঘাটতি: বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়াম বা ভিটামিনের অভাবেও চোখ কাঁপার প্রবণতা বাড়ে।

মায়োকেমিয়া: চোখের পাতার মাংসপেশি ঝাঁকুনির কারণে কোনও ব্যক্তির চোখ কুঁচকে যেতে পারে। মায়োকেমিয়া পেশিগুলির স্বাভাবিক সংকোচনের কারণে নিচের চোখের পাতার উপর আরও বেশি প্রভাব ফেলে। যার জন্যে চোখ অনেকসময় কাঁপে। 

কখন চোখ কাঁপা বিপদের সংকেত হতে পারে? যদি কাঁপুনি বার বার হয় বা কয়েকদিন পরেও বন্ধ না হয়, তবে বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ কিছু ক্ষেত্রে এটি স্নায়ুতন্ত্রের জটিল রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। যেমন- 

চোখের পেশি অনিয়ন্ত্রিতভাবে নড়াচড়া করে, ফলে চোখ নিজের থেকেই বন্ধ হতে শুরু করে।

 মুখের একপাশের পেশিগুলো বারবার খিঁচুনি দেয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে চোখ বা মুখের অনিয়ন্ত্রিত নড়াচড়া দেখা যেতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, যদি চোখ কাঁপা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে থাকে বা চোখের পাশাপাশি মুখ, ঠোঁট বা গালের দিকেও খিঁচুনি হয় তাহলে অবিলম্বে চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্ট-এর পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এছাড়া যদি চোখে ব্যথা, ঝাপসা দেখা, বা ফোলাভাব দেখা দেয়, সেটিও চোখের অন্য সমস্যা বা সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।


ঘরোয়া যত্নে কী করবেন

প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

দিনে ২ কাপের বেশি ক্যাফেইন না খাওয়াই ভাল।

চোখকে বিশ্রাম দিন। স্ক্রিনে কাজের সময় প্রতি ২০ মিনিট পর চোখ সরিয়ে বিশ্রাম নিলে ভাল।

ঠান্ডা জল ছিটান: দিনে কয়েকবার ঠান্ডা জল দিয়ে চোখ ধুলে আরাম পাবেন।

স্ট্রেস কমান: যোগ, মেডিটেশন বা হালকা ব্যায়াম করুন।