আজকাল ওয়েবডেস্ক: গরমে বা অতিরিক্ত পরিশ্রমে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসা, এবং সামান্য একটু জলের জন্য আকুলিবিকুলি করা নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু যদি জল খাওয়ার পরেও বারবার মুখ শুকিয়ে যায়? যদি মনে হয়, মুখের ভেতরটা আঠালো হয়ে আসছে, জিভ নাড়াতেও অস্বস্তি হচ্ছে? চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, এই অবস্থাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে জেরোস্টোমিয়া। এভাবে মুখ শুকিয়ে যাওয়ার গুরুতর রোগের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখের লালা বা স্যালাইভা খাদ্য হজমে সাহায্য করে। পাশাপশি এটি মুখ গহ্বরকে বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে। লালার উৎপাদন কমে গেলেই মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
১. ডিহাইড্রেশন: মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল শরীরে জলের ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন। কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করার কথা ভুলে যান। এর সঙ্গে যদি ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। তামাক এবং অ্যালকোহল উভয়েই লালা গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, অতিরিক্ত চা বা কফি পানের অভ্যাসও শরীরকে শুষ্ক করে তোলে।
২. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অনেক সময় আমরা যে ওষুধ খাই, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ, অবসাদ (অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট), অ্যালার্জি (অ্যান্টি-হিস্টামিন), পার্কিনসন্স এবং পেশি শিথিল করার (মাসল রিলাক্স্যান্ট) বেশ কিছু ওষুধ লালার উৎপাদন কমিয়ে দেয়। ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের ফলেও লালা গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৩. অন্য রোগের আগাম সঙ্কেত: একাধিক রোগের ক্ষেত্রেও মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। যেমন ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। আর শরীরে জলশূণ্যতা তৈরি হলে ঘন ঘন মুখ শুকিয়ে যায় ও অতিরিক্ত জল তেষ্টা পায়। অনেক সময় মাথায় বা ঘাড়ে আঘাত লাগার কারণে কোনো স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলেও একই ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে মস্তিষ্ক লালা গ্রন্থিতে সঠিক সঙ্কেত পাঠাতে পারে না, যার ফলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
