সকালে খালি পেটে গরম জল খাওয়া শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী—এমন ধারণা বহুদিনের। মেডিক্যাল নিউজ টুডে-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের মতে, সকালে গরম জল পান করলে পরিপাকশক্তি বাড়তে পারে, রক্তসঞ্চালন উন্নত হয় এবং স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে।

গরম জল লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে সক্রিয় করে, শরীরের টক্সিন বার করে দেয় এবং প্রাকৃতিক ডিটক্স প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে।

৫ ডিসেম্বর, বোর্ড সার্টিফায়েড চিকিৎসক ডা. জন ভ্যালেন্টাইন নিজের ইনস্টাগ্রামে খালি পেটে গরম জল খাওয়ার নানা উপকারিতা শেয়ার করেন। তিনি জানান—

কেন খালি পেটে গরম জল খাবেন?

ডা. জনের মতে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে গরম জল পান করলে আপনার শরীরে যেসব পরিবর্তন আসতে পারে—

ডিটক্সিফিকেশন

শরীরের অঙ্গগুলো ডিটক্স প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন, ‘গরম জল লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে জাগিয়ে তোলে, টক্সিন বার করে এবং শক্তিশালী ডিটক্স প্রক্রিয়া শুরু করে।’

চর্বি কমানো

নিয়মিত গরম জল খেতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে শরীর জমে থাকা খারাপ ফ্যাট পোড়াতে শুরু করে—খাবারের পরিবর্তন না করলেও। তার মতে, গরম জল মেটাবলিজম বাড়ায়, ফলে জমা ফ্যাট কমতে সাহায্য করে।

শরীরের কার্যক্ষমতা উন্নত

এক সপ্তাহ নিয়মিত গরম জল খেলে রক্তনালি প্রসারিত হয়, রক্তসঞ্চালন বেড়ে যায়, পুষ্টি দ্রুত শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছয় এবং বিপাকীয় বর্জ্য সহজে বার হয়ে যায়।

ফল কী হতে পারে?

ডা. জনের মতে, শরীর বেশি শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত হবে। এবং পরিপাকতন্ত্র আরও ভালভাবে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, “গরম জল হজম এনজাইম সক্রিয় করে, পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে এবং পেট ফোলা কমায়।”

মাথাব্যথাও কমতে পারে

যদি ডিহাইড্রেশন বা পেশির টানজনিত কারণে মাইগ্রেন হয়, গরম জল প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করতে পারে।


অ্যান্টি-এজিংও বাড়ায়

নিয়মিত গরম জল পান করলে ত্বক পরিষ্কার হয়, উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ফিরে পেতে সাহায্য করে।

তিনি আরও বলেন, “টক্সিন বার হওয়া এবং ত্বকে পর্যাপ্ত আর্দ্রতার জন্যই এই পরিবর্তন দেখা যায়। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম জল সবকিছু বদলে দিতে পারে।”

সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম জল পান করা কোনও জাদুমন্ত্র নয়, তবে এটি শরীরকে দিনের শুরুতে ভিতর থেকে পরিষ্কার ও সক্রিয় করে তুলতে সাহায্য করে। নিয়মিত করলে হজমশক্তি ও শক্তির মাত্রা বাড়ে, শরীর-মন দুইই হালকা লাগে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে—এটি চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং একটি সহজ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মাত্র। তাই নিজের শারীরিক অবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে ধীরে ধীরে অভ্যাস করলে এর উপকারিতা আরও ভাল ভাবে অনুভব করা যায়।