গোটা দিনে যাই খান না কেন, যতই শরীর চর্চা, ডায়েট করুন, ভাল থাকার আসল চাবিকাঠি কিন্তু প্রাতঃরাশ। আপনার সুস্থ থাকা বা না থাকা, অনেকটাই নির্ভর করে সকালের খাবার উপর। এমনকী আপনার বাকি দিনটা কেমন যাবে সেটাও। ব্রেকফাস্টে কী খাচ্ছেন না খাচ্ছেন তার উপরেই নির্ভর করে আপনার এনার্জি, মুড, হজম সবটাই। তাই সকালের অভ্যাস এবং খাওয়া দাওয়া সঠিক হওয়া জরুরি।
অনেকেই ফিট থাকতে সকাল সকাল দৌড়াতে যান। কেউ আবার যোগব্যায়াম করেন। শরীর চর্চা সেরেই ফলের রস খান। বা খালি পেটে অনেকটা জল। কিন্তু সাধারণত যে অভ্যাসগুলোকে ভাল থাকার চাবিকাঠি বলে মনে করা হয়, সেগুলো আদতে কতটা ঠিক? ভাল করতে গিয়ে, অজান্তেই নিজের বিপদ ডাকছেন না তো? জেনে নিন বিশেষজ্ঞরা কী জানাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে অনেকেই যে সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনেকটা জল খেয়ে নেন খালি পেটে এটা একেবারেই ঠিক নয়। তাঁদের মতে সকালে উঠেই ৩-৪ গ্লাস জল খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে গোটা রাত ধরে আপনার পেটে যে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড তৈরি হয় সেটা সম্পূর্ণ ভাবে ধুয়ে যায়। কিন্তু এই অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এটা হজমে সাহায্য করে। সকালে উঠে তাই অনেকটা জল খেয়ে নিলে পেট ফাঁপ দেওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। তাহলে কি একেবারেই জল খাওয়া উচিত নয়? না। তা কেন? ডায়েটিশিয়ানের মতে, এক গ্লাস জল খাওয়া উচিত। আর ঘুম থেকে ওঠার আধ ঘণ্টার মধ্যেই খাবার খাওয়া উচিত।
দ্বিতীয় ভুল লুকিয়ে, পুষ্টিকর ফলের রসে। সকালে ফলের রস একদমই খাওয়া উচিত নয়। অথচ অনেকেই কলা, আম, কমলালেবু বা অন্যান্য ফলের রস বানিয়ে খান, মনে করেন এটা বুঝি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু আদতে নয়। ফল চিবিয়ে খেলে তার ফাইবার শরীরে যায়, যা রক্তে শর্করাকে মেশার পদ্ধতি ধীর করে। কিন্তু রস খেলে সেটা হয় না। ফলে ফলের রস খাওয়ার পরপরই এনার্জি পেলেও, চট করে সেই এনার্জি পড়েও যায়। তাই সকালে ফলের রসের বদলে প্রোটিন পাউডার বা পিনাট বাটার খাওয়া উপকারী।
সকালের রুটিনের আরও এক বিরাট ভুল হল খালি পেটে দৌড়ানো। এতে স্ট্রেস বাড়ে, লাভের লাভ কিছুই হয় না। তাই সকালে কিছু খেয়ে তবেই শরীর চর্চায় মন দিন।
অনেকেরই অভ্যাস থাকে, চোখ খুললেই এক কাপ চা বা কফি খাওয়া। কিন্তু এতে যে কত বড় বিপদ লুকিয়ে জানেন না! খালি পেটে কফি বা চা খাওয়া হজম ক্ষমতা হ্রাস করে। শুধু তাই নয়, অ্যাসিডিটি পর্যন্ত হতে পারে। বমি হওয়া বা গা গুলানোও অস্বাভাবিক নয়। তাই খালি পেটে চা বা কফি খাওয়ার বদলে বাদাম বা টোস্ট খান।
কেউ কেউ আবার আজকাল ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন। সকালের খাবার সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দুপুরবেলায় ব্রাঞ্চ করেন। অর্থাৎ ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চ একসঙ্গে করেন। এটাও এক মস্ত ভুল। সকালে খালি পেটে থেকে তারপর গোটা দিন বেশি মাত্রায় খেয়ে কোনও লাভ নেই। কারণ সকাল থেকে না খেয়ে থাকার ফলে স্বাভাবিকভাবেই দুপুরে বেশি খিদে পায়, তখন বেশি খাওয়া হয়ে যায়। আর তাছাড়াও সকালে হজমশক্তি সবথেকে ভাল থাকে। তাই ভরপেট খাওয়া সকালেই খাওয়া উচিত। ব্রেকফাস্টে স্কিপ করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
