দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, আলোতে অস্বস্তি হচ্ছে বা চোখে শুষ্কতা অনুভব করছেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলি হতে পারে ভিটামিন এ-এর ঘাটতির স্পষ্ট লক্ষণ। চোখ আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান অঙ্গগুলির একটি। আর সেই চোখকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন এ হল এক অপরিহার্য উপাদান। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে চোখের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে নাইট ব্লাইন্ডনেস অর্থাৎ রাতে দেখার অসুবিধা এবং দৃষ্টিহানির ঝুঁকি বাড়ে।

চোখের জন্য ভিটামিন এ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? ভিটামিন এ চোখের রেটিনার কোষগুলিকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এটি চোখে আলো গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কর্নিয়া ও কনজাংটিভার আর্দ্রতা বজায় রাখে। এই ভিটামিনের অভাবে চোখ শুকিয়ে যায়, জ্বালা করে ও ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন এই ঘাটতি চললে চোখের কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা স্থায়ী অন্ধত্বের বিপদও ডেকে আনে। 

ভিটামিন এ-এর ঘাটতির সাধারণ লক্ষণ

*রাতে বা অন্ধকারে স্পষ্ট দেখতে অসুবিধা
*চোখে শুষ্কতা বা চুলকানি
*দৃষ্টির ঝাপসাভাব বা আলোতে অস্বস্তি
*চোখের সাদা অংশে ধূসর দাগ 
*ঘন ঘন চোখে সংক্রমণ

কীভাবে পূরণ করবেন ভিটামিন এ-এর ঘাটতি? রোজকার কয়েকটি খাবার থেকেই আপনি সহজে শরীরে ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করতে পারেন।

১. গাজরঃ গাজরে আছে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। প্রতিদিন এক বাটি গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়।

 ২. পালং শাক ও সবুজ শাকসবজিঃ পালং শাক, মেথি শাক, কলমি শাক-এই সব শাকে ভিটামিন এ ছাড়াও থাকে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা চোখের স্নায়ু রক্ষা করে।

৩. মিষ্টি আলু ও কুমড়োঃ এই সবজিগুলি উজ্জ্বল রঙের হওয়ার কারণেই এগুলিতে থাকে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে চোখের আর্দ্রতা বজায় থাকে।

 ৪. দুধ, ডিম ও মাছঃ দুধ, ডিমের কুসুম এবং মাছেও পর্যাপ্ত ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এগুলো চোখ ছাড়াও ত্বক ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

এছাড়াও দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমান, মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না, চোখ যাতে শুষ্ক না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত জল পান করুন, সূর্যের ইউভি রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।